থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন সেনাপ্রধান জেনারেল প্রায়ুত চান-ওচা।বুধবার অনুষ্ঠিত প্রথম দফা বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষকে নিয়ে আবারো বৈঠকে বসছেন থাই সেনাপ্রধান।
বুধবারের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর অনমনীয় ভূমিকায় জেনারেল চান-ওচা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আগামি সেপ্টেম্বরে তিনি অবসর নেয়ার আগে রাজনৈতিক দলগুলো সমাঝোতায় পৌঁছতে না পারলে ক্ষমতা সরে দাঁড়াবেন না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।
গত ক’মাস ধরে অব্যাহত রাজনৈতিক সঙ্কটের পর সেনাবাহিনী গত মঙ্গলবার সামরিক শাসন জারির ঘোষণা দেয়। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী কোনো গোলমাল ছাড়াই রাষ্ট্রের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
তবে সামরিক বাহিনী বলছে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্যই এই পদক্ষেপ। সেনাপ্রধান জেনারেল প্রায়ুত চান-ওচা সামরিক শাসন জারির প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু গোষ্ঠী অস্ত্র ব্যবহার করে নাগরিকদের হুমকি দিচ্ছিল।’
এদিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নিবাত্তুমরং বুনসংপাইসান সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা সংবিধানের মধ্যে থেকে কাজ করে এবং কোন সহিংসতা না ঘটায়। এরই মধ্যে তিনি আগামি ৩ আগস্ট নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন।
তবে সেনাবাহিনী থাইল্যান্ডের চলমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলার জন্য কী ভূমিকা নেবে এবং সরকারের সাথে কীভাবে কাজ করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ব্যাংককের রাস্তায়, টিভি স্টেশনগুলোতে এবং বিক্ষোভকারীদের প্রধান প্রধান সমাবেশস্থলগুলোতে সেনা মোতায়েন রয়েছে। গত দুইদিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার রাস্তায় সেনা টহল কম।
স্থানীয় একটি পত্রিকা জানায়, অন্তত দশটি টিভি চ্যানেল এবং কিছু স্থানীয় রেডিও স্টেশনসহ বেশ কিছু সংখ্যক গণমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষকে সংবাদ সেন্সর করে প্রচারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ মে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতার অপব্যবহারে দোষী সাব্যস্ত করে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয় দেশটির সাংবিধানিক আদালত। তবে আদালতে হাজিরা দেয়ার সময় মিস ইংলাক তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এদিকে গত কয়েক মাস থেকে আন্দোলরত ইংলাক বিরোধীরা প্রশাসেন সংস্কারসহ বিভিন্ন দাবিতে এখনো থাইল্যান্ডের রাজপথে অবস্থান করছেন।