নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশে জটিলতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, “দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থানে আনতে একটি কার্যকর ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রয়োজন। আগামী বছরের প্রথম অংশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করি। তবে অতীতের বস্তাপচা ধারার কোনো নির্বাচন আমরা চাই না, মেনে নেবও না।”
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে, সমতল মাঠে। মাস্তানতন্ত্র, কালো টাকার খেলা, কিংবা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ চলবে না। এমন একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়াই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে।”
স্থানীয় সরকার ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার:
জনগণের ভোগান্তি কমাতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেন জামায়াত আমির। তার ভাষায়, “বহু জায়গায় জনপ্রতিনিধি নেই, ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে আছে। তাই আমরা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি করেছি।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রবাসীরাও দেশের গণআন্দোলনের অংশীদার। তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। গণ-অভ্যুত্থান আমরা একা করিনি—প্রবাসীদের অবদানও সমান গুরুত্বপূর্ণ।”
স্বৈরাচার পতনের পেছনে ‘আল্লাহর ইচ্ছা’:
বর্তমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতন হয়েছে আল্লাহর ইচ্ছায়। এই পরিবর্তনের কৃতিত্ব বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের। আমরা কাউকে মাস্টারমাইন্ড মানি না, নিজেরাও তা দাবি করি না। কারণ, এ দাবি করলে অন্যদের অবমূল্যায়ন করা হবে।”
তরুণদের শক্তি ও চারিত্রিক ঘাটতির কথা:
দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে ‘বিশাল শক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ ৩৫ বছরের নিচে। তারাই সমাজে পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি। এদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়তে হবে।”
তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আল্লাহ আমাদের মাটির নিচে, ওপরে, এমনকি সমুদ্রেও অফুরন্ত সম্পদ দিয়েছেন। তবুও আমরা আজও একটি ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়তে পারিনি। কারণ, আমাদের ঘাটতি চারিত্রিক সম্পদে।”
জামায়াতের আমিরের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নির্বাচনের গতি প্রকৃতি অনেকাংশে নির্ধারিত হবে এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে।