যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আমেরিকান জনগণকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিয়েছে ওবামা প্রশাসন। সেইসঙ্গে ওবামাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার, হোয়াইট হাউসে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট “বংবং” মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে এক বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেন, “এই ষড়যন্ত্রচক্রের প্রধান ছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা, বারাক হুসেইন ওবামা। তিনি অপরাধী। এটা রাষ্ট্রদ্রোহ। ওরা নির্বাচন চুরি করতে চেয়েছিল, ধোঁকা দিতে চেয়েছিল, এমন কাজ করেছে যা অন্য দেশেও কল্পনা করা যায় না।”
ট্রাম্প এর আগেও ২০২০ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আলোচনায় এসেছেন, তবে এবার তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচন ঘিরে তার বিরুদ্ধে চলা তদন্তকে “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, যা নিয়ে তদন্ত করেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
সে সময় সিআইএ জানায়, রাশিয়া ট্রাম্পকে জেতাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। ওবামা তখন রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেন এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ২০১৭ সালে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যৌথ প্রতিবেদনে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
তবে ২০১৯ সালে রবার্ট মুলারের নেতৃত্বে পরিচালিত তদন্তে ট্রাম্পের প্রচার শিবির ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি যোগসাজশের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যদিও রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এ বিষয়ে ট্রাম্পের দাবি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তদন্ত ছিল তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা। “ওরা নির্বাচন কারচুপি করতে চেয়েছিল। ওরা হাতেনাতে ধরা পড়েছে,” বলেন তিনি। “এজন্য তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”
এদিকে ট্রাম্পের এই অভিযোগকে সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড। তিনি এক বিবৃতিতে দাবি করেন, ওবামা এবং তার উপদেষ্টারা গোয়েন্দা তথ্য বিকৃত করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তার ভাষায়, এই প্রচেষ্টা ছিল “জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একধরনের ক্যু।”
তবে গ্যাবার্ডের দাবি নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে বিভক্তি দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, তিনি ভিন্নমত ও বিকল্প তথ্য উপস্থাপনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একপাক্ষিকভাবে সাজিয়েছেন।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।