বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে যারা ভারতে ঠাঁই নিয়েছেন, তাদের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ।
কথিত বাংলাদেশিদের তাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে ভোটে বিজয়ী নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পাঁচ দিন আগে বুধবার মেঘালয় হাই কোর্টের এই রায়ের খবর প্রকাশ করেছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া।
সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, ৪০ জনের বেশি বাংলাদেশি উদ্বাস্তুর করা একটি রিট আবেদনে গত ১৫ মে মেঘালয় হাইকোর্টের বিচারক এস আর সেন ঐতিহাসিক এই রায় দেন।
আবেদনকারীরা সবাই আসাম সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের রি-ভয় জেলার আমজং গ্রামের বাসিন্দা। সম্প্রতি মেঘালয়ের ওই জেলার ডেপুটি কমিশনার রিট আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব সনদ জব্দ করার পর তারা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।
নাগরিকত্ব নিয়ে জটিলতার কারণ দেখিয়ে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
বিচারপতি সেন রিট আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব সনদ ফিরিয়ে দিতে এবং পরবর্তী নির্বাচনের আগে তাদের নাম ভোটার তালিকায় তুলতে ডেপুটি কমিশনার পূজা পান্ডেকে নির্দেশ দেন।
বিচারক তার পর্যবেক্ষণে বলেন, কারা ভারতে থাকবে আর কারা বাংলাদেশে ফেরত যাবে সে ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা ছিল।
তিনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার, আবেদনকারীদের পূর্বপুরুষরা ১৯৭১ সালের ২৪ মের আগে ভারতে এসেছিলেন। যেহেতু তাদের আমজং গ্রামে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসিত করা হয়েছে, তাই এখন আর তাদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নই আসে না।’
এসব নাগরিককে ফেরত পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করে আদালত।
একইসঙ্গে তাদের কোনোভাবে বিব্রত না করার পাশাপাশি সঠিক পুনর্বাসনে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত।
বাংলাদেশের জন্মের আগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতের মেঘালয়সহ বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেন অনেকে।
এদের সম্পর্কে রাজ্য সরকারের দাবি ছিল- এসব বসতি স্থাপনকারী ও তাদের পূর্বপুরুষরা রাজ্যের স্থায়ী নাগরিক নয়। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন তাদেরকে অস্থায়ীভাবে পুনর্বাসিত করেছিল।