প্রাণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন মাহেরীন চৌধুরী, আসিফ আকবরের আবেগঘন শ্রদ্ধা

SHARE

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় জীবন দিয়ে অন্তত ২০ শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করেছেন সাহসী শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী। মৃত্যুর মুহূর্তে নিজের দায়িত্ব থেকে একচুল না সরে যাওয়া এই শিক্ষিকা এখন দেশের মানুষের চোখে হয়ে উঠেছেন নিঃস্বার্থতা ও সাহসিকতার প্রতীক।

সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার পর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায় বিমান ও ভবনের একাংশে। ভবনে তখন অনেক শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। তাদের নিরাপদে সরিয়ে আনতে ঝাঁপিয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারান মাহেরীন চৌধুরী।

এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক আর শ্রদ্ধায় ভরে উঠেছে দেশবাসীর মন। সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর ফেসবুকে এক আবেগঘন পোস্টে মাহেরীন চৌধুরীর আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখেন:
“‘দৌড়াও, ভয় পেও না আমি আছি।’ প্রয়াত শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী নিজের দুই সন্তানের মায়া, নিজের ছাত্রছাত্রীদের জন্যও অমোঘ মায়া। হেরে গেলেন মা মাহেরীন, জিতে গেলেন শিক্ষিকা মাহেরীন ম্যাডাম।”

তিনি আরও লেখেন,
“জিতিয়ে গেলেন শিক্ষকতার মত মহান পেশাকে। অনিয়মের দেশে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির চেয়ে আরও ভয়াবহ অনেক কিছুই আসবে সামনে, আমাদের নিয়তি এমনই। ভবিষ্যতের আলো বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় নিজেই চলে গেলেন পরপারে।”

আসিফের ভাষায়,
“নিয়তির নিষ্ঠুরতাকে ব্যতিক্রম প্রমাণ করে মা, বাবা আর শিক্ষকের ভেদরেখা মুছে দিয়েছিলেন ‘দ্য সিক্রেট সুপারস্টার’ ম্যাডাম মাহেরীন। বিনম্র শ্রদ্ধা, শোক পরিণত হোক শক্তিতে। আকস্মিক ঝড়ে ঝরে যাওয়া সব ফুল প্রস্ফুটিত হোক জান্নাতের বাগানে। আমিন।”

মাহেরীন চৌধুরীর এই আত্মত্যাগ নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ও জরুরি ব্যবস্থা নিয়ে। তবে এই ক্ষণে জাতীয়ভাবে যেটি সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে, তা হলো—একজন শিক্ষিকার নিঃস্বার্থ সাহস, মানবিকতা, আর কর্তব্যবোধের এক অনন্য উদাহরণ।