গোলের খেলা ফুটবল। জয়-পরাজয় নির্ধারণের একমাত্র নিয়ামক গোল। একটি ম্যাচে বড় জোড় কতোটি গোল হতে পারে? ৫টি, ১০টি কিংবা ১৫টি? আপনার ধারণা যদি এর বেশি অতিক্রম করে, তাহলে ধরে নিতে হবে আপনি গড়ের মাঠের ফুটবলের কথা বলছেন।
আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১০টির বেশি গোল হওয়াটা শুধু শ্রমসাধ্য নয়, কঠিনও বটে। অবশ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচে দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৩১-০ গোলে জয়ের রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার দখলে রয়েছে।
এবার অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ডকেও হার মানিয়েছে ফিজি ফুটবল দল। দ্য ফেডারেল স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়ার বিপক্ষে তারা এক ম্যাচেই করেছে ৩৮ গোল! তাও আবার ২০১৬ অলিম্পিকের বাছাইপর্বে! ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়া ৩১-০ গোলে জিতেছিল আমেরিকান সামোয়ার বিপক্ষে।
এটাই ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে মাইক্রোনেশিয়ার বিপক্ষে ৩৮-০ গোলে জিতেছে ফিজি। এই বিশাল জয়ে ফিজির অ্যান্তোনিও তুইভুনা একাই করেছেন ১০ গোল। ম্যাচে প্রথমার্ধে ২১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ফিজি। দ্বিতীয়ার্ধে তারা মাইক্রোনেশিয়া জালে আরো ১৭টি বল জড়ায়।
তবে এই জয়ের রেকর্ডকে ফিফা স্বীকৃতি দিবে কিনা সেটা বলা মুশকিল। কারণ, টুর্নামেন্টটি যে বয়সভিত্তিক। এর আগে অস্ট্রেলিয়া যে ম্যাচে ৩১-০ গোলে জিতেছিল সেটা ছিল ওশেনিয়া অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ। সে কারণে ওটা রেকর্ডের স্বীকৃতি পেয়েছিল।
ফিজির কাছে ৩৮-০ গোলে হারার আগের ম্যাচে মাইক্রোনেশিয়া ৩০-০ গোলে হেরেছিল তাহিতির কাছে। ওই ম্যাচের পর হয়তো তারা ভেবেছিল এর চেয়ে আর খারাপ ম্যাচ হয়তো হবে না। কিন্তু পরের ম্যাচেই তারা ফিজির কাছে হারল ৩৮-০ গোলে। আর দুই ম্যাচে দলটি ৬৮ গোল হজম করেছে! ভাবছেন এখানেই শেষ? তা কিন্তু নয়। এখনো একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে মাইক্রোনেশিয়ার। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তারা মুখোমুখি হবে ভানুয়াতুর। যারা ফিজির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। এখন দেখার বিষয় ভানুয়াতুর বিপক্ষে কয়টি গোল হজম করে ফেডারেল স্টেটস অব মাইক্রোনেশিয়া।
মাইক্রোনেশিয়া এখনো বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার অর্ন্তভূক্ত হতে পারেনি। এমনকি তারা সহযোগি দেশের মর্যাদা পায়নি। তা ছাড়া ফুটবলের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে তারা। খেলোয়াড় স্বল্পতার কারণে তারা ২৩ দলের দল ঘোষণা করতে পারেনি। বর্তমানে তাদের দলে রয়েছে মাত্র ১৮ জন খেলোয়াড়।
সংক্ষেপে মাইক্রোনেশিয়া :
ফেডারেল স্টেট অব মাইক্রোনেশিয়া ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিকের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। যা ৬০০ দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এই ৬০০টি দ্বীপ নিয়ে ৪টি প্রদেশ গঠন করা হয়েছে। সেগুলো হল- কোসরায়ি, পোহনপেই, চুক ও ইয়াপ। দেশটির ভূমি মাত্র ৭০২ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার। দেশটির ভুখ- মাত্র ৭০২ বর্গ কিলোমিটার হলেও প্রশান্ত মহাসাগরের ২৬ লাখ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল তাদের দখলে রয়েছে।
মাইক্রোনেশিয়া ১৯৮৬ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘কম্প্যাক্ট অব ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন’ চুক্তিকে স্বাক্ষর করেছে। সে কারণে ওয়াশিংটন দেশটির সব ধরণের দায় দায়িত্ব নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি দিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে অন্য যেকোনো দেশের হস্তক্ষেপ কিংবা প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে তাদের একটি আসনও রয়েছে।