সিন্ধু নদীতে পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে : বিলাওয়াল ভুট্টো

SHARE

চরম উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় সরকার পাকিস্তানকে এক ফোঁটাও সিন্ধু নদীর পানি না দেওয়ার হুংকার দিয়েছেন। কাশ্মীর হামলার জেরে সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। ভারতের এমন কর্মকাণ্ড ও পানিচুক্তি থেকে একতরফা সরে যাওয়ার পর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ভারতের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছে।

শুক্রবার সুক্কুরে এক বড় জনসভায় পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, ‘সিন্ধু নদী আমাদের এবং সেটা আমাদেরই থাকবে।
’ জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিলাওয়াল ভুট্টো বলেছেন, ‘সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।’ পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ভারতের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন, পাকিস্তান মহান সিন্ধু সভ্যতার বৈধ উত্তরসূরি হিসেবে এই নদীর ওপর তার দাবি কখনোই ত্যাগ করবে না।

পেহেলগাম হামলার পর ভারতের একতরফা সিন্ধু পানিচুক্তি থেকে সরে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ভুট্টো পরিবারের এই উত্তরসূরি বলেন, ‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হয়তো এই সভ্যতার উত্তরাধিকার নিয়ে গর্ব করতে পারেন, কিন্তু প্রকৃত অভিভাবকরা রয়েছেন পাকিস্তানের মাটিতে।’

তিনি আরো জানান, বিতর্কিত ছয়টি নতুন খাল নির্মাণের বিষয়ে এখন কেন্দ্রীয় সরকার সব প্রদেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় রাজি হয়েছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই নদীতে হয় পানি বইবে, নয়তো ভারতীয়দের রক্ত।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সিন্ধু সভ্যতার উত্তরাধিকার দাবির জবাবে বিলাওয়াল বলেন, ‘তিনি (মোদি) বলেছেন তারা হাজার হাজার বছরের পুরনো এক সভ্যতার উত্তরসূরি, কিন্তু সেই সভ্যতা লারকানার মহেঞ্জোদারোতে অবস্থিত। আমরাই এর প্রকৃত রক্ষক এবং আমরা এটিকে রক্ষা করব।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেউই মোদির কোনো চেষ্টা সহ্য করবে না।

বিলাওয়াল বলেন, ভারত সরকার পাকিস্তানের পানির দিকে নজর দিয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে চারটি প্রদেশ ঐক্যবদ্ধ, যাতে সবাই মিলে তাদের পানি রক্ষা করতে পারে। আমরা দুনিয়াকে জানিয়ে দেব যে, সিন্ধুর ওপর ডাকাতি বরদাস্ত করা হবে না।’

পাকিস্তানের সবচেয়ে কমবয়সী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বিলাওয়াল বলেন, পাকিস্তান এবং এর জনগণ ভারতের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে, কারণ পাকিস্তানিরাও সন্ত্রাসবাদের শিকার। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ভারত এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে ভারত সেই চুক্তি বাতিল করছে।

পিপিপি চেয়ারম্যান তার সমর্থকদের আহ্বান জানান, তারা যেন ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, তাদের নদী রক্ষার জন্য দৃঢ় সংগ্রামের প্রস্তুতি নেয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকেও আশ্বস্ত করে জানান, যদিও পিপিপি ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর মধ্যে রাজনৈতিক পার্থক্য আছে, তবুও ভারতকে মোকাবেলায় তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকবে।

সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন