বাংলাদেশে চীনের মালা থেকে মুক্তা খসাল ভারত

SHARE
modi hasina7চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তিনি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্থলসীমান্ত চুক্তির নিষ্পত্তিসহ বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিষয়গুলোতে ২০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করেছেন। এর বাইরে দুই নেতা সন্ত্রাস প্রতিরোধে সহযোগিতা, বাণিজ্য বাড়ানো, দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক আদান-প্রদানের মতো বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেছেন। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়েও আলোচনা করেছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

মোদির সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটি হলো পণ্যবাহী ভারতীয় জাহাজগুলোকে চীন নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ব্যবহারের সুযোগ দিতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি। এ চুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আগেই আলোচনা হয়েছিল এবং এটি ২০১১ সালেই স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল বলে জানা যায়।

ভারত মহাসাগরে চীনের কৌশলী পরিবেষ্টনী নিয়ে ভারতের জনগণের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে। এর আলামত পাওয়া যায় ২০১৪ সালের শেষের দিকে চীনের সাবমেরিন শ্রীলঙ্কায় নোঙর করলে। ভারত এর মৌখিক প্রতিবাদ জানিয়েছিল। উপরন্তু, ভারতের ভাষ্যকার ও কৌশলগত বিষয়াদির বিশ্লেষকরা ভারত মহাসাগরের পূর্ব দিকে চীনের সামরিক মহড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ভারতের ভাবনা, ভারত মহাসাগরের উপকূলে তাদের অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো বাগিয়ে নিচ্ছে চীন এবং বন্দরগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে, যেটা আদতে নয়াদিল্লির নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা।

এক দশক আগে, একটি প্রতিবেদনে ‘মুক্তার মালা’ (স্ট্রিং অব পার্লস) রূপকটি ব্যবহার করা হয়। ভালো ও মন্দ—দুই অর্থেই এটির ব্যবহার আছে। এর পর থেকে সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষকরা সাগরে ভারত-চীন প্রতিযোগিতার আলোকে ওই রূপক ব্যবহার করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর অনেক দিন ধরেই চীন নিয়ন্ত্রিত বন্দরগুলোর (পাকিস্তানের গোয়াদার, শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা, মালদ্বীপের মারাও এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউ) তালিকায় আছে, যেগুলো বেইজিংয়ের ‘মুক্তার মালা’ হিসেবে পরিচিত। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বন্দরে ভারতের বেসামরিক জাহাজ প্রবেশ কেবল দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করবে না, তা একই সঙ্গে ঢাকার ওপর বেইজিংয়ের প্রভাব নিয়ে নয়াদিল্লির ভীতিও কমাবে।