ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা ইরানের উদ্দেশ্য নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি

SHARE

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, ইসরায়েলকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা ইরানের রাষ্ট্রীয় নীতি নয় এবং দেশটি কখনোই ইসরায়েলের ধ্বংস কামনা করেনি। সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎকারে আরাগচি বলেন, “ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলাই আমাদের নীতি নয়। আমরা কখনোই চাইনি ইসরায়েলের ধ্বংস হোক। অনেক সময় আমাদের সর্বোচ্চ নেতা বা আমরাও বলি ‘যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হোক’ কিংবা ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’, তবে এর অর্থ শাব্দিক নয়—এগুলো আধিপত্যবাদী রাজনীতির পতন কামনার প্রতীক। সাধারণ জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি আমাদের উদ্দেশ্য নয়।”

তিনি জানান, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী ইরান হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুথি আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও এই সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আরাগচির ভাষায়, “তারা ন্যায়সংগত কারণে সংগ্রাম করছে, তাই আমরা তাদের নীতিগতভাবে সমর্থন জানাচ্ছি।”

আন্তর্জাতিক দ্বৈতনীতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যেমনটা সত্য যে আমরা হামাস, হিজবুল্লাহ এবং হুথিদের সমর্থন দিচ্ছি, তেমনি এটাও সত্য যে যুক্তরাষ্ট্র দশকের পর দশক ধরে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। অথচ সে বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্ন তোলা হয় না। মার্কিন সহায়তায় ইসরায়েল যা করছে, তা আসলে সাধারণ মানুষ হত্যার নামান্তর।”

সাক্ষাৎকারে সাম্প্রতিক একটি মার্কিন অভিযোগ নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয় সম্প্রতি দাবি করেছে, ২০২০ সালে মার্কিন রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ এক কমান্ডার কাসেম সোলায়মানিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইরান গুপ্তঘাতক নিয়োগ করেছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, ফরহাদ শেকেরি নামের ৫১ বছর বয়সী সেই ব্যক্তি এখনও ইরানে অবস্থান করছেন।

জবাবে আরাগচি বলেন, “আমরা অন্য দেশের রাষ্ট্রপতি তো দূরের কথা, আমাদের ভূখণ্ডের বাইরেও কোনো সাধারণ নাগরিককে হত্যা করি না। এটি আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতির পরিপন্থী।”

সাক্ষাৎকারে আরাগচির এসব মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।