যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চলমান পরমাণু উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আসন্ন ২৬ জুলাই পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইসলামাবাদে অবতরণ করার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই সফর, যা ইরান-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়েই ইরানের আধাসরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এবং এই সম্পর্ক দৃঢ় ও স্থিতিশীল।
সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক কূটনীতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে ইরান পরমাণু ইস্যুতে সংলাপে বসে, যার উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো। তবে এই সংলাপ চলাকালীন গত ১২ জুন ইসরায়েল ইরানে বিমান হামলা চালায়, যার পাল্টা জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলের দিকে। পরে ২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
এছাড়া সীমান্ত নিরাপত্তা ও সহযোগিতা ইরান-পাকিস্তান সম্পর্কের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ইরানের সঙ্গে বেশ কয়েকটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে, যার মধ্যে গাব্দ-রিমদান ও তাফতান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর পাকিস্তান সাময়িকভাবে সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রাখলেও দেশটির শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব ইরানের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি ও ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনির মধ্যে টেলিফোনে আলাপ হয়েছে। আলাপচারিতায় ইরানের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বর্ষাকালীণ দুর্যোগে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
পেজেশকিয়ানের আসন্ন সফরকে কেন্দ্র করে উভয় দেশ কৌশলগত ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।