গাজায় পোলিও টিকা ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল, ঝুঁকিতে ৬ লাখ শিশু

SHARE

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে টানা ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। অবিরাম হামলার পাশাপাশি গাজার ওপর ইসরায়েল জারি রেখেছে সর্বাত্মক অবরোধ, যার ফলে মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে পুরো উপত্যকা।

এই পরিস্থিতিতে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হয়েছে—ইসরায়েলের বাধায় গাজায় পোলিও টিকা প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সেখানে ৬ লাখেরও বেশি শিশু মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তীব্র উদ্বেগ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়,

“টিকা ঢুকতে না দেওয়ার কারণে পোলিও প্রতিরোধে শুরু হওয়া চতুর্থ পর্যায়ের ক্যাম্পেইন বন্ধ হয়ে গেছে।”

মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে,

“টিকা সরবরাহ অব্যাহত না থাকলে ৬ লাখ ২ হাজারের বেশি শিশু আজীবনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়তে পারে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজার শিশুদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বর্তমানে “নজিরবিহীন ও ভয়াবহ”। কারণ অঞ্চলটিতে পর্যাপ্ত পুষ্টি, ওষুধ এবং নিরাপদ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

২০২৪ সালের আগস্টে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথম একটি ১০ মাস বয়সী শিশুর শরীরে পোলিও শনাক্ত করে। সেটিই ছিল ওই অঞ্চলে প্রথমবারের মতো পোলিও সংক্রমণের ঘটনা। এরপর থেকেই ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেও শিশুদের সুরক্ষায় টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

তিনটি ধাপে পরিচালিত এই কার্যক্রমে প্রথম ধাপে ৫ লাখ ৬০ হাজারের বেশি শিশু টিকা পায়। দ্বিতীয় ধাপে ১০ বছরের নিচে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭৪ শিশু এবং তৃতীয় ধাপে আরও ৫ লাখ ৯০ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া হয়।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, পূর্ণ সুরক্ষার জন্য গাজার শিশুদের অন্তত দুটি মৌখিক পোলিও টিকা গ্রহণ করা জরুরি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই লক্ষ্য অর্জন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ইসরায়েলের অব্যাহত অবরোধ এবং প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। গাজায় শিশুদের ভবিষ্যৎ এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে।