হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে অর্থ বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপে মামলা

SHARE

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছে। প্রশাসনের প্রস্তাবিত বিলিয়ন ডলারের তহবিল কাটছাঁট ঠেকাতে এই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মামলাটি হার্ভার্ড ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যকার সাম্প্রতিক টানাপড়েনের প্রেক্ষিতে এসেছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত কিছু দাবিতে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ প্রত্যাখ্যান করার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

প্রশাসনের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বৈচিত্র্যবিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগ সীমিত করা এবং ইহুদি-বিরোধিতার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে হার্ভার্ড স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, তারা আইন মেনেই চলবে এবং তাদের একাডেমিক স্বাধীনতা বা সাংবিধানিক অধিকার থেকে একচুলও সরবে না।

এর আগে, গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হার্ভার্ডের ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের করমুক্ত সুবিধা বাতিলের হুমকি দেন। হার্ভার্ডের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম. গারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটিকে দেওয়া এক চিঠিতে বলেন, “সরকারের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের ফল ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, তহবিল বন্ধের কারণে শিশু ক্যান্সার, আলঝেইমার ও পারকিনসন্স রোগ নিয়ে চলমান গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ব্যাহত হচ্ছে।

মামলায় হার্ভার্ড যুক্তি দেয়, “এটি এমন এক ঘটনা, যেখানে সরকার অর্থসহায়তা বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়।” একই সঙ্গে তারা জানায়, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রেও প্রশাসনের চাপ বাড়ছে।

অ্যালান গারবার, যিনি নিজেও একজন ইহুদি, স্বীকার করেন যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিরোধিতার সমস্যা রয়েছে। তিনি জানান, সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় দুটি পৃথক টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে, যারা ইহুদি ও মুসলিম-বিরোধিতা নিয়ে কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট টাস্ক ফোর্সগুলোর প্রতিবেদন শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।

হার্ভার্ড একা নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের শিকার হয়েছে আরও কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়। করনেল ইউনিভার্সিটির ১ বিলিয়ন ডলার এবং ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ৫১০ মিলিয়ন ডলার ফেডারেল তহবিলও স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়— যেখানে গত বছর ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ হয়েছিল—প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল রক্ষায় প্রশাসনের কিছু শর্ত মেনে নেয়।

এ বিষয়ে এখনো হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি।