প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সেদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশ সমস্যা সমাধান করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উ থাউং তুন আজ মঙ্গলবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমস্যা সমাধান করব। ’
সাক্ষাত শেষে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুইটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা হবে এটা স্বাভাবিক। তবে আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা-সমাধান করতে সক্ষম। এ প্রসঙ্গে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার কথা উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় ৩০ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে বসবাস করছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। বর্ষা মৌসুমে এরা চরম দুর্ভোগের শিকার হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সকল সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক বিশেষ করে ইয়াবা পাচার সম্পর্কে সেদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে সকল প্রকার সহযোগিতার প্রদানের আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ কখনো কোনো সশস্ত্র গ্রুপ এবং বিদ্রোহীদের প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে এদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না।
সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পল্লী এলাকার উন্নয়নই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণসহ বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন। মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা তার দেশে এ ধরনের সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
থাউং তুন বলেন, তার দেশে লক্ষ্য হচ্ছে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ শান্তি প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, ইয়াঙ্গুন উভয় দেশে শান্তি চায়। তার দেশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিরাপত্তা ইস্যুতে উভয় দেশ তথ্য বিনিময় করছে। তিনি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে গ্যাস বিক্রির বিষয়ে থাউং তুন বলেন, উভয় দেশ এ ব্যাপারে আলোচনা করতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের চমৎকার উন্নয়নের প্রশংসা করেন মায়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম।