পঞ্চগড়ে শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস। কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন। চরম দুর্ভোগে পড়েছে দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষ। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা অনাহারে অর্ধাহারে দিনযাপন করছে।
কদিন ধরে অব্যাহত তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে পঞ্চগড়ের মানুষ। রাতভর বৃষ্টির মতো তুষার পড়ছে। আর দিনভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে আকাশ। দিনের শিশিরে শরীর ভিজে যায়। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন ঘর থেকে বের হয়না। দিনভর শহরের অধিকাংশ রাস্তা ফাঁকা দেখা গেছে। রিকশা-ভ্যানচালক আর খেটে খাওয়া মানুষের আয় শূন্যের কোঠায় নেমেছে।
বর্তমানে জেলায় ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে। কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সময় মতো যানবাহন নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাতে পারছে না। দিনের বেলায় হেটলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
কনকনে শীতের কারণে রিকশা-ভ্যানচালক আর দিনমজুর শ্রেণির মানুষের আয় শূন্যের কোঠায় নেমেছে। বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঠান্ডার কারণে যাত্রীরা রিকশা-ভ্যানে উঠছেন না। শুক্রবার থেকে দেখা মেলেনি সূর্যের।
এদিকে,জেলায় কোনো আবহাওয়া অফিস না থাকায় সঠিক তাপমাত্রার পরিমাপও জানা যায়নি। তবে বে-সরকারি বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, রাতে ৭ থেকে ৮ এবং দিনে ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠানামা করছে। ঘন কুয়াশায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বোরো বীজতলাসহ কৃষি ক্ষেত্রে।
অপরদিকে, শিশুদের জন্য বাড়তি সতর্কতা নিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সর্দিকাশি লেগে থাকছে। গত দুই দিনে (শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত) পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নতুন করে ৫১ শিশু শীতজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে।
শহরের রামের ডাংগা এলাকার রিকশাচালক মো. রফিজল বলেন, আগে দিনে দুই থেকে আড়াইশ টাকা আয় হতো। এখন শীতের কারণে কেউ রিকশায় উঠতে চায় না। আয় কমে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড় শীতপ্রবণ এলাকা। এখানে বরাবরই একটু বেশি শীত অনুভূত হয়। শীতকাতর মানুষদের মাঝে কম্বলসহ কিছু শীতবস্ত্র দেয়া হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য। শীতের প্রকোপ থেকে দুঃস্থদের বাঁচাতে তাদের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।