শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আয়ের হিসেব দিতে হবে

SHARE

nahid30নিজেদের স্বার্থেই দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আয়ের হিসেব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

আজ বুধবার জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘পেয়ার ইন্সপেকশন’ বিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিআইএ পরিচালক প্রফেসর মো. মফিজ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে ৭ হাজার ৫০৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে সরকারের প্রায় আড়াই শ’ কোটি টাকা ব্যয় হতো। বর্তমানে ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে ব্যয় হয় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। শিক্ষা বাজেটের অধিকাংশ টাকা পরিদর্শন খাতে চলে যাচ্ছে। এ টাকার সঠিক ব্যবহার হয় না।

তিনি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি, অনুদান, প্রতিষ্ঠানের জমি, জায়গা, পুকুর থেকে প্রচুর পরিমাণে আয় হলেও সরকার অনেক ব্যয় বহন করে থাকে। মাদ্রাসাতেও ওয়াজে মোটা অংকের আয় হয়।
এ আয়ের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, এ টাকা কোথায় ব্যয় হয় তাও সরকারকে জানায় না প্রতিষ্ঠান।

অনেক নামিদামি প্রতিষ্ঠান টিউশন ফিসহ বেশ কিছু খাতে কোটি কোটি টাকা আয় করে। এ আয় দিয়ে তারা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করে। আমরা চাই, এ ব্যয়ের সঠিক হিসেব থাকুক।

এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ও অতিরিক্ত আদায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

নাহিদ বলেন, এ টাকা সরকার নেবে না। তবে ‍প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতার জন্য এর হিসেব দিতে হবে। যেন এসব টাকার সঠিক ব্যবহার হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এসব আয়ের সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এ ইন্সপেকশনের মাধ্যমে সরকারি অনুদান ও প্রতিষ্ঠানের আয় দু’টি বিষয়ের স্পষ্ট হিসেব দিতে হবে। যে শিক্ষা আইন হচ্ছে তাতে দু’টি আলাদা আইন করে দেওয়া হবে।

ডিআইএ যে জনবল ও অবকাঠামো রয়েছে তা দিয়ে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে ২০ বছর সময় লাগবে। আমরা তাদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে চাই। পেয়ার ইন্সপেকশনের মাধ্যমে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও মূল্যায়ন করবেন। এতে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত, একাডেমিক বছরে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, জবাবদিহিতা, শিক্ষন পদ্ধতির উন্নয়ন সম্ভব হবে।

এজন্য গাইড লাইন তৈরি করে দেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

নাহিদ বলেন, অনেক নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে খাম খুলে প্রশ্নপত্র বাইরে দিয়ে দিচ্ছেন। এদের অনেককে হাতে-নাতে ধরাও হয়েছে। শিক্ষকদের সম্মান রক্ষা ও শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখতে অনৈতিক কাজ গুলো বন্ধ করতে হবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েম’র মহাপরিচালক প্রফেসর মো. হামিদুল হক।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিআইএ উপ-পরিচালক দীপন চন্দ্র সরকার। এতে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তারা অংশ নেন।