হবিগঞ্জের সাতছড়ি এলাকায় সীমান্তবর্তী গভীর জঙ্গলে র্যাবের বুধবারের অভিযানেও বেশকিছু অস্ত্র,গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে। তবে, গত দুদিনে উদ্ধার করা এসব অস্ত্র কাদের জন্য বা কারা এনেছে, সে ব্যাপারে র্যাব এখনও কিছু বলতে পারছে না।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, দেশের ভিতরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য নাকি ভারতীয় কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের জন্য এগুলো আনা হয়েছিল, এমন সব প্রশ্ন তারা তদন্ত করে দেখবেন।
ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের চার কিলোমিটার ভিতরে চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ির পাহাড়ি জঙ্গলে র্যাব তাদের অভিযান অব্যাহত রাখছে।
র্যাব বলেছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই অঞ্চলে চারদিন ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে তিনটি টিলায় সাতটি বাংকারের খোঁজ পায় তারা। আর এই বাংকার থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্রের দেখা পায় মঙ্গলবার।
বুধবারও সেখান থেকে মেশিনগান এবং কামান বিধ্বংসী গোলাসহ অনেক অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এখন সেখানে একটি সুড়ঙ্গ এবং ইউনিফরম ও কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে।
র্যাবের মুখপাত্র এটিএম হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, দু’দিনে বিভিন্ন ধরণের ভারী অস্ত্র তারা সেখানে পেয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “দু’দিনের অভিযানে দু’শোর বেশি ট্যাংক বিধ্বংসী গোলা বা রকেট পাওয়া গেছে। উদ্ধার করা হয়েছে একটি রকেট লঞ্চার । এর চার্জার পাওয়া গেছে দু’শটির মতো। পাঁচটা মেশিনগান এবং এর কিছু ব্যারেল উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তেরো হাজারের মতো গোলাবারুদ উদ্ধার করা গেছে।”
তবে এত অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ কাদের ব্যবহারের জন্য সেখানে ছিল অথবা কারা এর পিছনে থাকতে পারে, এসব প্রশ্নে এখনও কোনো জবাব মিলছে না।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, উঠে আসা সব প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হবে তদন্তে।
প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, “দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা, জঙ্গি তৎপরতা এবং বিচ্ছিন্নবাদীদের জন্য উপযুক্ত অস্ত্র সেখানে পাওয়া গেছে। এ বিষয়গুলো নিয়েই তদন্ত করা হবে।”
তবে র্যাবের এই অভিযানে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদের পাশাপাশি কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে।
সেগুলো ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো সংগঠনের কিনা, সেই প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, “এসব কাগজপত্র ভূয়াও হতে পারে। তবে আমরা বলছি, কোনোটাই অসম্ভব নয়। সব বিষয়ই খতিয়ে দেখা হবে”।
ভারতের অনেক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে যে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং অনুরোধের ভিত্তিতে র্যাব এই অভিযান চালায়।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সরাসরি কিছু বলেননি। তিনি বলেছেন, “ভারত অনেক সময়ই অনেক কিছু আমাদের বলে। আমরা সেগুলোর কোনোটা খুঁজে পাই। কোনোটার কিছু পাওয়া যায় না। এই অভিযান আমরাই করেছি। তদন্ত হলে সব জানা যাবে।”
র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমানের বক্তব্য হচ্ছে, মামলার তদন্তেই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।
এই অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেছে র্যাব।
এদিকে, ঘটনাস্থল অর্থাৎ ওই বনাঞ্চলের কাছে কিছু মানুষের বসতি ছিল। তাদের বেশিরভাগই ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গেছেন বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি।