বিমান দুর্ঘটনায় ভাই হারানো ভাইয়ের হৃদয়বিদারক গল্প ছুঁয়ে গেল মেহজাবীনকে: “আমরা কতটা অমানবিক হয়ে গেছি!”

SHARE

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় সাম্প্রতিক যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এক তরুণ ভাইয়ের মৃত্যু ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে এসেছে এক মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা। এই করুণ অভিজ্ঞতা আরও আলোচনায় আসে, যখন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

একজন ব্যক্তি ‘এনএসইউ ফ্যাকাল্টি কোর্স’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে তার দগ্ধ ভাইকে সময়মতো হাসপাতালে নিতে না পারার বেদনাদায়ক গল্প শেয়ার করেন। তিনি লিখেছেন, দুর্ঘটনার পরপরই শত শত মানুষ আশপাশে ভিড় করে শুধু মোবাইলে ভিডিও করছিল। কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি পানি ও রিকশাভাড়া জোগাড় করতে নিজের হাতঘড়ি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয় তাকে।

এই ঘটনাটি চোখ এড়ায়নি মেহজাবীনের। তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে এই হৃদয়বিদারক কাহিনির স্ক্রিনশট শেয়ার করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং লেখেন:

“আমরা কতটা অমানবিক হয়ে গেছি! দেশে অ্যাম্বুল্যান্স চলাচলের জন্য কোনো আলাদা লেন নেই, সামান্য কিছু হলেই রাস্তাজুড়ে জ্যাম, আর একটু বৃষ্টি হলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট। যেই সময়টাতে সবার উচিত রাস্তাটি ফাঁকা করে দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সেই সময় মানুষ ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে ভিডিও করার জন্য, কনটেন্ট বানানোর লোভে।”

তিনি আরও লিখেছেন:

“কিভাবে পারে এরা পানির দাম, গাড়ির ভাড়া, সব কিছু এভাবে বাড়িয়ে দিতে? রাতে এরা ঘুমোয় কিভাবে? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের চোখে চোখ রাখতে পারে?”

মেহজাবীনের এই পোস্টে অসংখ্য অনুরাগী একমত পোষণ করেছেন। কেউ লিখেছেন, “আমরা লজ্জিত, কারণ আমরা বাংলাদেশি নাগরিক!”, কেউ ক্ষোভে লিখেছেন, “এই দেশে জীবনের মূল্য নেই, বাকি সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া।”

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত আরও ৬৯ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে।

এই ঘটনা শুধু একটি দুর্ঘটনার ট্র্যাজেডি নয়, বরং আমাদের সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের জোরাল এক প্রতিচ্ছবি—যার বিপরীতে মুখ খুলছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকাও।