সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-তে বড় ধরনের সংশোধন এনে নতুনভাবে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে বুধবার এটি জারি করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ।
কী আছে সংশোধিত অধ্যাদেশে:
নতুন অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের মাধ্যমে অন্য সরকারি কর্মচারীর কাজ বা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে এটি “সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ” হিসেবে বিবেচিত হবে। এমন অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে তিন ধরনের শাস্তির যে কোনো একটির মুখোমুখি হতে হতে পারে:
নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ
বাধ্যতামূলক অবসর
চাকরিচ্যুতি
অধ্যাদেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কোনও কর্মচারী নিজের কর্তব্যে অনুপস্থিত থাকলে কিংবা অন্যদের কর্মে বাধা দিলে বা সরকারের বৈধ আদেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত ও শুনানির প্রক্রিয়া:
যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠবে, তাকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তদন্ত ও শাস্তির সিদ্ধান্তের আগে তাকে ব্যক্তিগতভাবে শুনানির সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, সেটিও নোটিশে উল্লেখ থাকবে।
আপিল ও রিভিউ:
রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনও আপিল করা যাবে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী আদেশ পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিকট রিভিউ আবেদন করতে পারবেন। এই রিভিউ সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।
অধ্যাদেশ জারির কারণ:
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সংসদ বর্তমানে ভেঙে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে আইনটি সংশোধন করা প্রয়োজন ছিল। তাই সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ জারি করেন।
বিশ্লেষণ:
আইনজীবীরা মনে করছেন, অধ্যাদেশে আন্দোলনের বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ না করা হলেও যেভাবে ধারাগুলোতে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তাতে পরিষ্কারভাবে সরকারি কর্মচারীদের যেকোনো ধরনের সংগঠিত কর্মবিরতি বা কর্মবাধা কঠোরভাবে দমন করার আইনি ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে।
এই অধ্যাদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং এটি সরকারের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় আরও কঠোর অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।