ক্যামেরা লেন্সকে অস্ত্র ভেবেছিলো শিশুটি

SHARE

siriya girlযুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়ার একটি শরনার্থী শিবিরে তোলা একটি শিশুর ছবি হাজার হাজার বার শেয়ার হয়েছে অনলাইনে, প্রথমবার টুইটারে পোস্ট হওয়ার পর টুইট হয়েছে এগার হাজার বারের বেশি।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে শিশুটি দুহাত উপরে তুলে ভীতিকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যা দেখে মনে হয় সে দাঁড়িয়ে আছে গান পয়েন্টে বা অস্ত্রের মুখে।

হৃদয় তোলপাড় করা এ ছবিটি আসলে ইন্টারনেটেরই হৃদয় বিদীর্ণ করার মতো একটি ছবি যেটি দেখলে যে কারোরই প্রচণ্ড কষ্ট হবে ছোট এ শিশুটির জন্য।

ছবিটি যিনি তুলেছিলেন সেই ফটো সাংবাদিক ওসমান সাগিরলির বর্ণনায়, “আমি একটি টেলিফটো লেন্স ব্যবহার করেছিলাম কিন্তু সে এটিকে একটি অস্ত্র ভেবেছিলো। আমি বুঝতে পেরেছিলাম শিশুটি ভয় পেয়েছে। ছবিটি নিয়ে আমি দেখলাম কারণ সে তার ঠোট কামড়ে হাত উপরে তুলেছিলো। সাধারণত শিশুরা ক্যামেরা দেখলে মুখ লুকোয় বা হাসি দিয়ে দৌড় দেয়”।

তিনি বলেন , “আসলে শিশুরা নি:স্বার্থভাবেই তাদের অনুভূতির প্রকাশ ঘটনায়”।

ছবিটি প্রথম প্রকাশিত হয় একটি তুর্কি সংবাদপত্রে যেখানে সাগিরলি প্রায় ২৫ বছর কাজ করেছেন।

ওই সময় তুরষ্কের সোশ্যাল মিডিয়াতে এটির ব্যাপক প্রচার হয়।

কয়েক মাসের মধ্যে ইংরেজি-ভাষার জগতে ছড়িয়ে পড়ে ও পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক প্রচার পায়।

মূলত নাদিয়া আবু শাবান নামে গাজা ভিত্তিক একজন ফটো সাংবাদিক টুইটারে পোস্ট করার পরই ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

মূহুর্তেই শেয়ারের পর শেয়ার আর কমেন্টের পর কমেন্টে তোলপাড় সৃষ্টি করে এ ছবিটি।

নাদিয়া অবশ্য জানান যে ছবিটি তার তোলা নয় কিন্তু বলতেও পারেননি যে কে তুলেছেন ওই ছবিটি।

ছবির সাথে ফটোগ্রাফারের নাম বা ক্রেডিট না থাকায় ছবিটির সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিলো।

তাহলে ছবিটি কে তুলেছিলেন এবং ঘটনাটিই বা কি ?

বিবিসির অনুসন্ধানে দেখা গেছে ছবিটি তুলেছিলেন ওসমান সাগিরলি নামে একজন ফটো সাংবাদিক এবং পরে তার কাছেই জানতে চাওয়া হয়েছিলো ছবিটির ইতিবৃত্ত।

এখন তানজানিয়ায় কাজ করছেন ওসমান সাগিরলি। তিনিই ছবিটির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান ওই শিশুটি একটি মেয়ে। চার বছরের ওই শিশুটির নাম হুদিয়া। ছবিটি তোলা হয়েছিলো গত বছর ডিসেম্বরে সিরিয়ার আতমেহ এলাকার একটি শরণার্থী শিবিরে।

ওই শিবিরে শিশুটি গিয়েছিলো তার মা আর দু সহোদরের সাথে।

এটা সিরিয়ার হামা এলাকায় তাদের বাড়ি থেকে অন্তত ১৫০ কিলোমিটার এবং তুর্কি সীমান্তের ১০ কিলোমিটার দুরে।