ম্যাচের বড় একটা সময় নিয়ন্ত্রন করেছে আরব আমিরাত। কিন্তু নিজেদের ছন্দটা গোটা সময় ধরে রাখতে পারেনি দলটি। স্নায়ুর চাপটাও সামলাতে পারেনি বহুজাতিক খেলোয়াড়ে গড়া আমিরাত।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের অনভিজ্ঞতার দাম দিতে হলো আইসিসি সহযোগী দেশটিকে। তাই জিম্বাবুয়ের পর আয়ারল্যান্ডের কাছেও একই পরিণতি বরণ করতে হলো আমিরাতকে। বুধবার ব্রিসবেনে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনাকর ম্যাচে আয়ারল্যান্ড ২ উইকেটে পরাজিত করেছে আমিরাতকে। এই জয়ে শেষ আটের আরও কাছাকাছি চলে গেল আইরিশরা।
২৭৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় আয়ারল্যান্ড। পল স্টারলিং ফিরেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড ও এড জয়েসের ৬৮ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় আইরিশরা। তবে ৯৭ রানে প্রতিপক্ষের চার উইকেট ফেলে দিয়ে ম্যাচে ফিরেছিল আমিরাত। পোর্টারফিল্ড ৩৭, এড জয়েস ৩৭, নেইল ও’ব্রায়েন ১৯ রান করেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে বালব্রিনি ও উইলসন ৭৪ রান যোগ করেন। যা আইরিশদের জয়ের রাস্তা সুগম করে দেয়। বালব্রিনি ৩০ রান করে ফিরলেও উইলসন একপ্রান্ত আগলে ছিলেন।
রান-বলের ব্যবধানটা ঘুচিয়ে দিয়ে গেছেন কেভিন ও’ব্রায়েন। ২৫ বলে ৫০ রানের (৮ চার, ২ ছয়) ক্যামিও উপহার দেন তিনি। শেষদিকে উইলসন- মুনিদের আউট করে ম্যাচটা জমিয়ে দিয়েছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি মোহাম্মদ তৌকিরের দল। কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হলেও ইনিংসের শেষ ওভারে কুস্যাক, ডকরেল দলের জয় নিশ্চিত করেন। উইলসন ৬৯ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৮০ রান (৯ চার) করেন। কুস্যাক ৫, ডকরেল ৭ রান করেন। আমিরাতে পক্ষে আমজাদ জাবেদ ৩টি, নাভিদ-তৌকির ২টি করে উইকেট নেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ রানের ওপেনিং জুটিতে আমিরাতের শুরুটা খারাপ হয়নি। আইরিশদের ব্রেক থ্রু এনে দেন পল স্টারলিং। বেরেনজার ১৩ রানে ফিরেন। কৃষ্ণ চন্দ্র, আমজাদ আলী, স্বপ্নীল পাতিলরা দ্রুত ফিরলে ৭৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে আমিরাত। ওপেনার আমজাদ আলী আউট হওয়ার আগে ৪৫ রান করেন। অভিজ্ঞ খুররাম খান ৩৬ রান করে ডকরেলের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন। দলীয় ১৩১ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন রোহান মুস্তাফা।
তখন আমিরাতের ইনিংসের দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল আইরিশরা। তাদের সেই স্বপ্ন গুঁড়েবালি করে দেন শায়মন আনোয়ার ও আমজাদ জাবেদ। সপ্তম উইকেট জুটিতে তারা দুজন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। দুশো রানই যেখানে দূরতম কল্পনা ছিল সেখানে তাদের ব্যাটেই আমিরাত পেয়ে যায় আড়াই ছাড়ানো স্কোর। ১০৭ রানের জুটি গড়েন শায়মন আনোয়ার-আমজাদ জাবেদ। এটি বিশ্বকাপে ৭ম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে ৯৮ রান করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেডলি জ্যাকবস-সারওয়ান ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
জাবেদ ৩৫ বলে ৪২ রান করে ফিরলেও শায়মন আনোয়ার টিকে ছিলেন। ৫১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন তিনি। কেভিন ও’ব্রায়েনের বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন তিনি। ৭৯ বলে তার সেঞ্চুরি। সরেনসেনের বলে উইলসনের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৮৩ বলে ১০৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন শায়মন আনোয়ার। তিনি ১০টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান। এটি বিশ্বকাপে আমিরাতের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি। শেষ দিকে নবী ১৩ রান করেন। আয়ারল্যান্ডের সরেনসেন, কেভিন ও’ব্রায়েন, স্টারলিং, কুস্যাক ২টি করে উইকেট পান।