গাজা উপত্যকা থেকে ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবগত পাঁচজন এনবিসি নিউজকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এই পরিকল্পনা সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞাত দুই ব্যক্তি এবং একজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, পরিকল্পনাটি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে লিবিয়ার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে প্রশাসন।
ওই তিন ব্যক্তির দাবি, ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের বিনিময়ে লিবিয়াকে শত শত কোটি ডলারের তহবিল ফেরত দেবে ট্রাম্প প্রশাসন, যা এক দশকেরও বেশি সময় আগে জব্দ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র তিনটি জানিয়েছে, কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। ইসরায়েলকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদকে মন্তব্যের অনুরোধ করা হলেও জবাব দেয়নি তারা।
তবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অসত্য আখ্যা দিয়ে মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, মাঠের পরিস্থিতি এই ধরনের পরিকল্পনার জন্য উপযোগী নয়। এই ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়নি এবং এর কোনো অর্থ নেই।
এ বিষয়ে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেন, ফিলিস্তিনিদের শিকড় তাদের মাতৃভূমিতে গেড়ে আছে এবং মাতৃভূমির জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিজেদের ভূমি, পরিবার এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য যেকোনো ত্যাগ করতে প্রস্তুত ফিলিস্তিনিরা।
গাজাবাসীসহ ফিলিস্তিনিদের কী করা উচিত বা অনুচিত, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র ফিলিস্তিনিদের। ইসরায়েল সরকারের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গাদ্দাফির পতনের পর প্রায় ১৪ বছর ধরে লিবিয়া গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক কোন্দলে জর্জরিত। দেশটিতে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার—পশ্চিমাঞ্চল আবদুল হামিদ দিবেইবাহর নেতৃত্বাধীন এবং পূর্বে খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন। দুই পক্ষই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লড়াই করছে।
লিবিয়ায় গাজাবাসীকে স্থানান্তর পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে দিবেইবাহর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে হাফতারের লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি কোনো মন্তব্য করেনি। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, গাজার কতজন ফিলিস্তিনি স্বেচ্ছায় লিবিয়ায় যেতে রাজি হবেন। এই স্থানান্তরের পরিকল্পনা কখন বা কিভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে, তাও অস্পষ্ট।
তবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই, ১০ লাখ মানুষকে সেখানে পুনর্বাসনের চেষ্টায় সম্ভবত উল্লেখযোগ্য বাধা আসবে। এ ছাড়া এই প্রচেষ্টা হবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ট্রাম্প প্রশাসন কিভাবে এর খরচ বহন করবে তাও স্পষ্ট নয়।