পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাহিরা খান তার পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই তিনি সব প্রতিকুলতা সামলে নিয়েছেন। তালাকপ্রাপ্ত একক মা হিসেবে জীবনযাপন, বলিউডে পাকিস্তানি শিল্পীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং রণবীর কাপুরের সঙ্গে ধূমপানের ভাইরাল হওয়া ছবির ঘটনায় বেশ কয়েকবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তবে তিনি নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন আবারও।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের উত্থান-পতন ও বিভিন্ন প্রতিকুলতা কাটিয়ে উঠার কথা বলেন মাহিরা খান। বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক খোলামেলা আলাপচারিতায়, মাহিরা খান স্বীকার করেন, বিবাহিত জীবনে তালাক, একক মাতৃত্ব, ভাইরাল হওয়া ছবি এবং ভারতে নিষেধাজ্ঞার মতো ঘটনাগুলো তার জন্য ভীষণ কঠিন ছিল। অনেক সময় পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তিনি অনেক কিছু নিজের মধ্যেই চেপে রেখেছেন।
মাহিরা বলেন, “রণবীর কাপুরের সঙ্গে তাঁর ধূমপানের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর ভেবেছিলাম আমার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
‘দ্য লিটল হোয়াইট ড্রেস’ শিরোনামে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে আমার সাফল্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি প্রশ্ন তোলা হয়েছিল—এখন আমার কী হবে? সেই সময় ভেঙে পড়েছিলাম। প্রতিদিন বিছানায় শুয়ে কেঁদেছি। এই ঘটনা আমার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।”
তবে সেই কঠিন সময়েও মাহিরা আশাবাদী ছিলেন যে এই দুঃসময় একদিন কেটে যাবে।
তিনি নিজের ও সন্তানের জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেগুলো ছিল তার গভীর চিন্তাভাবনার ফসল। পেশাগতভাবে তিনি চুপ ছিলেন। তবে তখন বেশ কিছু নামি ব্র্যান্ড মাহিরার পাশে দাঁড়ায় এবং তাদের সমর্থন জানান অভিনেত্রীকে। যা তাকে নতুন করে পথ চলতে সাহস জোগায়।
২০১৭ সালে মাহিরা খান ও রণবীর কাপুরের নিউ ইয়র্কের রাস্তায় ধূমপানরত কিছু ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।
এতে ভক্তদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়, তাদের মধ্যে কি প্রেমের সম্পর্ক আছে? ছবিগুলোর কারণে মাহিরা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন, যা তার মানসিক শান্তিতে বড়সড় আঘাত হানে। তবে সবকিছুর পরও মাহিরা খান উঠে দাঁড়িয়েছেন—আরও দৃঢ়, আরও সচেতন, আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে।
মাহিরা খান পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যিনি মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছেন। ‘হামসাফার’ নাটকের মাধ্যমে তিনি সারা দেশে পরিচিতি পান, আর বলিউডে শাহরুখ খানের বিপরীতে ‘রইস’ সিনেমায় অভিনয় করে আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর সাবলীল অভিনয়, ব্যক্তিত্ব এবং সংগ্রামী জীবনের গল্প তাঁকে আজকের মাহিরা করে তুলেছে।