চীনের ব্যাংকগুলোকে ডলার ব্যবহার করতে না দেওয়ার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

SHARE

হংকংয়ে নতুনভাবে চীন জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়ার ফলে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে হংকংয়ের বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা বাতিল করে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। সে কারণে চীনের ব্যাংকগুলো চরম বেকায়দায় পড়েছে।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার হংকংয়ের অগ্রাধিকারমূলক সুবিধার ইতি টানতে নির্বাহী এক আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে এতদিন হংকং যে বিশেষ সুবিধা পেত, এখন থেকে তা আর পাবে না।

একইসঙ্গে হংকং অটোনমি অ্যাক্টের অধীনে চীনা বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। হংকংয়ের ওপর নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সেখানে অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে চীনের যেসব কর্মকর্তা নির্যাতন চালানোর অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

তাতে আরো বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া কর্মকর্তার সঙ্গে বাণিজ্য করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া যেসব ব্যাংক নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে, তারা মার্কিন ব্যাংক থেকে ঋণ পাবে না। বিদেশি কারেন্সি এবং ব্যাংকে লেনদেন, কিংবা অর্থ লগ্নি করাটাও অপরাধ। তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ মার্কিন প্রশাসন বাজেয়াপ্ত করতেও পারে।

নিষেধাজ্ঞা কেবল চীনের প্রতিষ্ঠানের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। হংকং অটোনমি অ্যাক্টের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল ব্যাংক অব চায়না (বিওসি), ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার কথা মাথায় রেখে।

হংকং অটোনমি অ্যাক্টের খসড়া তৈরির সময় রিপাবলিকান সিনেটর প্যাট টমি বলেছিলেন, অদূর ভবিষ্যতে চীনের অর্থনীতি মার্কিন ডলারের লেনদেনের ওপর নির্ভর করবে। যখন ব্যবসায়ী এবং আর্থিক স্বার্থগুলো বুঝতে পারে যে এটি এমন একটি সরঞ্জাম যা মোতায়েন করা যায়, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি চীন সরকারের ওপর পুরোপুরি নতুন স্তরের চাপ তৈরি করা সম্ভব হবে।

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ‘রিজার্ভ মানি’তে অংশ হারিয়ে ফেলা অনেক বেশি ঝুঁকির। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অন্তত চারটি ব্যাংক ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসে এক দশমিক এক ট্রিলিয়ন ডলার বঞ্চিত হওয়ার দায়বদ্ধতা রয়েছে।

এই প্রতিষ্ঠানগুলো কেবল চীনের বাণিজ্যিক লেনদেনই পরিচালনা করে না, বেইজিংয়ের বেল্ট এবং রোড অবকাঠামোগত উদ্যোগের জন্য অর্থের উৎস হিসেবেও কাজ করে।

জাপানের নমুরা রিসার্চ ইন্সটিটিউটের অর্থনীতিবিদ তাকাহিদে কিউচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে যেসব চীনা কম্পানি বিদেশে বাণিজ্য করে, তারা মার্কিন ডলার লেনদেন করতেই পারবে না। চীনের বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পাবে। সে কারণে ডিজিটাল ইয়েন আন্তর্জাতিকীকরণ করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।

আর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সিদ্ধান্ত বিশ্ব রাজনীতিতে ট্রাম্প কার্ড হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : এশিয়ান রিভিউ