ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তারা শান্তি আলোচনায় গুরুত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করছে না। মস্কো আসলে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার জেলেনস্কি ও রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন এবং রুশ ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা তিন বছরেরও বেশি সময় পর এই সংঘাতের ওপর প্রথম সরাসরি আলোচনার জন্য শুক্রবার ইস্তাম্বুলে মিলিত হয়েছেন।
কিন্তু আলোচনা কোনো যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছতে ব্যর্থ হয় এবং জেলেনস্কি পুতিনের বিরুদ্ধে আলোচনার টেবিলে ‘খালি মাথা’ পাঠানোর অভিযোগ করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জেলেনস্কি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে রাশিয়া তার যুদ্ধ ও দখলদারি অব্যাহত রাখার জন্য কালক্ষেপণের চেষ্টা করছে।’
পুতিনের সঙ্গে সোমবার দুই ঘণ্টার কথোপকথনকে একটি অগ্রগতি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ট্রাম্প, যখন রিপাবলিকানরা যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি অধরা চুক্তির সন্ধান করছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
কিন্তু পুতিন আবারও পূর্ণ, তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে সম্ভাব্য রোডম্যাপ ও যুদ্ধের অবসানের বিভিন্ন অবস্থানের রূপরেখাসংবলিত একটি স্মারকলিপিতে কাজ করতে প্রস্তুত। আর জেলেনস্কি সোমবার জানান, তিনি এই ‘স্মারকলিপি’ সম্পর্কে কিছুই জানেন না, তবে রাশিয়ার প্রস্তাবগুলো দেখতে আগ্রহী।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ করে এবং তার পর থেকে দেশটির পূর্বাঞ্চলের একাংশ ধ্বংস করেছে। কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে এবং এখন তাদের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে।
জেলেনস্কির সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার জন্য তুরস্কে ভ্রমণ করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ইউক্রেন ও ইউরোপ ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, যাতে তিনি মস্কোর ওপর বিশাল নিষেধাজ্ঞার নতুন প্যাকেজ চাপিয়ে দেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ফলাফল বয়ে আনে—এমন যেকোনো আলোচনার জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত। আর যদি রাশিয়া অবাস্তব শর্ত পেশ করতে থাকে এবং অগ্রগতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে থাকে, তাহলে অবশ্যই কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
কিয়েভ ইস্তাম্বুল আলোচনায় মস্কোর আলোচকদের বিরুদ্ধে অবাস্তব দাবি তোলার অভিযোগ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত আঞ্চলিক দাবি, যা ইউক্রেন বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে।