রাখাইনে আরাকান আর্মির উত্থানে নতুন উদ্বেগ

SHARE

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শুধু রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদেরই দেখা যায় না, সেখানে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে বৌদ্ধদের আরাকান আর্মিও। আর এসব অস্ত্রধারী গোষ্ঠীর কারণে দিন দিন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যেই সে এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এবার নতুন সংঘাত তৈরি হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্লেষকরা।

চলতি মাসে আরাকান আর্মির হামলায় ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর পরেই নতুন করে আলোচনায় আসে আরাকান আর্মির প্রসঙ্গ।

রাখাইন রাজ্য স্বাধীন করতে উদ্যোগ নিয়েছে ‘আরাকান আর্মি’। মিয়ানমার সরকার এ ‘আরাকান আর্মি’ সংগঠনটিকে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দেশটি এ গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এদিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযানের পর রোহিঙ্গা অস্ত্রধারীদের প্রভাব এখন সীমিত হয়ে পড়েছে রাখাইনে।

এবার রাখাইনের পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক অভিযান চালাতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। ফলে পরিস্থিতি ক্রমে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।

আরাকান আর্মির অধিকাংশ সদস্য এসেছেন নৃতাত্ত্বিক বৌদ্ধ গোষ্ঠীগুলো থেকে। সাম্প্রতিক এসব সহিংসতায় রাখাইনে মারাত্মক নৃতাত্ত্বিক বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে দেখা দিয়েছে, যা রাজ্যটিতে দীর্ঘদিন ধরে বড় ধরনের ক্ষতের জন্ম দিয়েছে।

চীন-মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কাচিন মুক্তি বাহিনী (কেআইএ)। এ সংগঠনটিই অত্র অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তার করছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সবচেয়ে বড় নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী হচ্ছে কাচিনরা।

রাখাইনকে বিভক্ত করে দেয়া বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের সহিংসতাকে এড়িয়ে গেছে আরাকান আর্মি।

গত কয়েক বছরে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে আরাকান আর্মির। কিন্তু গত কয়েক মাসে এ সংঘাত বেড়েই চলেছে। আরাকান আর্মির যোদ্ধারা সুসজ্জিত ও পশিক্ষণপ্রাপ্ত। আগামীতে বড় ধরনের লড়াইয়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে সাম্প্রতিক এসব সহিংসতা।

ভবিষ্যতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংঘাত প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারতকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যেই সে এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এবার পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অনেকেই।