বাড়ির চারপাশের বাগানের জন্য প্রয়োজন পানি। কিন্তু নিজের কূপ খননের বা শ্যালো মেশিন কেনার সামর্থ্য না নেই। কি আর করা নিজেই তিন মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে খনন করেন একটি কূপ। সেই কূপের পানিতেই বাগানের নারকেল, সুপারি ও কলা গাছে পানি সেচের ব্যবস্থা হয়।
ওই নারীর নাম গৌরী এস নায়েক। বয়স ৫১। বাড়ি ভারতের কর্ণাটক রাজ্যর উত্তর কনড় জেলার সিরসি এলাকায়। পানির অভাব পূরণের জন্য এই বয়সে একাই খুঁড়ে ফেলেছেন একটি কূপ। ৬০ ফুট গভীর এই কূপ খোঁড়ার কারণেই ওই এলাকায় তিনি ‘লেডি ভাগিরথি’ নামে পরিচিত পেয়েছেন।
গৌরীর বাড়ির চারপাশে নারকেল ও সুপারির বাগান। পানির অভাবে বাগানের গাছগুলো ঠিকমতো বেড়ে উঠছিল না। এ জন্য দরকার প্রচুর পানি। কিন্তু তার এত টাকা নেই যে, শ্রমিকের পেছনে অর্থ ব্যয় করে কূপ খনন করবেন। উপায় না দেখে নিজের হাতে তুলে নেন কোদাল। তিন মাসের কঠোর পরিশ্রমের পর কূপ থেকে পানি আসে তার জমিতে। এক সন্তানের জননী গৌরীর শ্রমিক রেখে ওই কাজ করানোর সামর্থ্য না থাকায় একাই একাজ করেছেন। বাড়ির চারপাশে করা তার বাগানে ১৫০টি সুপারি গাছ, ১৫টি নারকেল গাছ এবং কিছু কলা গাছ আছে।
গৌরী প্রতিদিন ৫-৬ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম করতেন। খনন কাজের শেষ পর্যায়ে তিনি আরও তিনজন নারীর সহায়তা নেন। তবে তা শুধুই ময়লাগুলো অর্থাৎ ওই তিনজন নিচের কাদা-মাটি উত্তোলনের জন্য সাহায্য করেছিলেন তাকে। ৬০ ফুট গভীর ওই কূপের মধ্যে এখন ৭ ফুট পানি। আর ওই পানি তিনি অবাধে ব্যবহার করছেন তার বাগানে।
গৌরী ওই এলাকার স্থানীয় ধর্মস্তালা পল্লি উন্নয়ন স্কিমের সদস্য। ওই স্কিমের অফিসার বিনোদা বলেন, ‘গৌরী যখন আমাদের বৈঠকগুলোতে আসত তখন তার শরীরে ব্যথার কথা বলতেন। কিন্তু আমরা তার কূপ খননের এ কাজ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। যখন তার বাড়িতে গিয়েছি তখন জানতে পারলাম তিনি কী কাজ করেছেন।’