চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শহরের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে ৮০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সরকারি বার্তাসংস্থা সিনহুয়া মঙ্গলবার জানিয়েছে, বেইজিংয়ের মিয়ুন জেলায় ২৮ জন এবং ইয়ানচিং জেলায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শহরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত প্রাণহানির এই সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত সপ্তাহান্ত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ সোমবার আরও তীব্র হয়। সিনহুয়ার তথ্য অনুযায়ী, বেইজিংয়ের উত্তরাঞ্চলে সর্বোচ্চ ৫৪৩ মিলিমিটার (২১.৩ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা সিসিটিভি জানায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে ৮০ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্তত ১৩৬টি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বেইজিংয়ে মঙ্গলবার সকালেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছু এলাকায় ৩০০ মিলিমিটার (১১.৮ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
১৯৫৯ সালে নির্মিত বেইজিংয়ের মিয়ুন জেলার একটি জলাধারের পানি ধারণক্ষমতা ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে পানি ছাড়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সতর্ক করেছে, নিচু এলাকায় নদীগুলোর পানি বাড়বে এবং আরও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার রাতে উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে প্রাণহানি কমানো যায়। কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে, স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে, নির্মাণকাজ ও সব ধরনের আউটডোর পর্যটন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের তাইশিতুন শহরে সোমবার রাস্তাগুলো কাদায় ভরে যায়। একইসঙ্গে সেখানে পানি জমে যায় আর অনেক গাছ উপড়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা ঝুয়াং ঝেলিন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, “বন্যার পানি হঠাৎ করে চলে এলো। এত দ্রুত হঠাৎ করে পানি এলো যে কিছু বোঝার আগেই সব কিছু ডুবে গেল।”
সোমবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বেইজিংয়ের দক্ষিণে হেবেই প্রদেশে ভূমিধসে ৪ জন নিহত ও ৮ জন নিখোঁজ হয়েছেন।