ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ এবং শাসনক্ষমতা থেকে বিদায়ের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে কাতার, সৌদি আরব, মিসরসহ আরব বিশ্বের ১৭টি দেশ। ৭ পৃষ্ঠার এই বিবৃতিকে সমর্থন করেছে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জোট আরব লীগও।
গত জুনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠন এবং মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান ইস্যুতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে একটি সম্মেলন হয়েছিল। সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যৌথভাবে সেই সম্মেলনের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে ছিলেন।
৭ পৃষ্ঠার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাজায় যুদ্ধ অবসান এবং একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের স্বার্থে হামাসকে অবশ্যই তাদের শাসনের অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থনপুষ্ট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন সরকার) কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।”
বর্তমানে জাতিসংঘে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদায় রয়েছে ফিলিস্তিনি। গত সোমবার এক বার্তায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিন মিশন গাজায় শান্তি স্থাপনের স্বার্থে হামাস এবং ইসরায়েল— উভয়পক্ষকেই সেখান থেকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। পাশাপাশি গাজার প্রশানিক দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যাস্ত করার প্রস্তাবও করা হয়েছিল সেই আহ্বানে।
গত কাল বুধবার ৭ পৃষ্ঠার যে বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে ১৭ আরব রাষ্ট্র, সেখানে গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এই ব্যাপারটি বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়, কারণ এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৭ অক্টোবরের হামলা নিয়ে কোনো নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত হয়নি।
জুনে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন বিষয়ক সম্মেলনে সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে চেয়ারের দায়িত্ব পালনের পর গত ২৪ জুলাই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা করেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স।
গত কাল মধ্যপ্রাচ্যের ১৭ দেশের বিবৃতি প্রকাশের পর সেটিকে ‘ঐতিহাসিক’ এবং ‘অভূতপূর্ব’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেন নোয়েল ব্যারট। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “এই বিবৃতি ঐতিহাসিক এবং অভূতপূর্ব। কারণ এই প্রথম আরব বিশ্বের দেশগুলো এবং মধ্যপ্রাচ্য হামাসকে নিন্দা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের হামলার নিন্দা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রশাসন থেকে হামাসকে বিদায় নিতে বলেছে এবং ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইঙ্গিত দিয়েছে।”