প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জয়; একই সঙ্গে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে সাত নম্বরে উঠে বাংলাদেশের চ্যাম্পিন্স ট্রফি খেলার নিশ্চয়তা, সবই এখন ফিকে হতে বসেছে একটি খবরে।
বাতাসে ভেসে বেড়ানো গুঞ্জন অনুসারে জিম্বাবুয়ে যদি সত্যিই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ত্রিদেশীয় ওই সিরিজ আয়োজনে সফল হয় তাহলে রদবদল হতে পারে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে। তখন পাল্টে যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার হিসাব নিকাশ।
ধরা যাক, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো; তখন বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট হবে ৯৯। ডিদ ২-১ ব্যবধানে জিতে তাহলে রেটিং হবে ৯৬। অন্যদিকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারলে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৯৩ থেকে ভগ্নাংশ পরিমাণ কমবে। আর ৩-০ ব্যবধানে হারলে পয়েন্ট দাঁড়াবে ৯০।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোয়াইট ওয়াশ হলেও অবশ্য কোনো সমস্যা হবে না বাংলাদেশের; কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেটিং এখন ৮৮, আর পাকিস্তানের ৮৭। পাকিস্তান যদি শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫-০ সিরিজ জিতে তাহলে তাদের রেটিং পয়েন্ট হবে ৯৪। আর ৪-১ ব্যবধানে জিতলে হবে ৯২ এর চেয়ে ভগ্নাংশের হিসাবে সামান্য কম। তখন র্যাংকিংয়ের সাতে উঠে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাবে পাকিস্তান।
আর পাকিস্তান ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জিতলে তাদের রেটিং হবে ৯০। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হলেও র্যাংকিংয়ের সাতেই থাকবে। ফলে অষ্টম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে পাকিস্তান।
তবে পাকিস্তান যদি শ্রীলঙ্কার কাছে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হারে তাহলে তাদের রেটিং হবে ৮৮ চেয়ে সামান্য কম। তখন র্যাংকিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেছনেই থাকবে তারা। ৪-১ ব্যবধানে হারলে পাকিস্তানের রেটিং হবে ৮৬; আর ৫-০ ব্যবধানে হেরে হোয়াইট ওয়াশ হলে ৮৪ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে সব হিসাব-নিকাশের বাইরে চলে যাবে পাকিস্তান। তখন আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার স্বাদ পূর্ণ হবে না তাদের।
তবে বাংলাদেশের কাছে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারা পাকিস্তান শ্রীলংকার মাটিতে সিরিজ যে জিতবে এবং সেটি ৩-২ ব্যবধানেই হবে; এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই তাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে খেলতে না চাওয়ারও কোনো কারণ নেই তাদের। ত্রিদেশীয় টুনার্মেন্টে প্রতিটি দল পরস্পরের সঙ্গে দুটি করে মোট চারটি ম্যাচ খেলবে। সেরা দুই দল খেলবে ফাইনাল।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অন্তত একটা ম্যাচ যারাই হারবে, তারা আর র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের উপরে যেতে পারবে না। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান প্রথম পর্বে নিজেদের দুই ম্যাচের একটি করে জিতলে এবং ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতলে, দুদলই র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের উপরে চলে যাবে। তখন হয়তো বাংলাদেশকেই দর্শক হয়ে থাকতে হবে!
তবে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের পরিকল্পনাই বুমেরাং হয়ে যাবে, যদি বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে অন্তত একটা ম্যাচে হারিয়ে দেয়। আর তাই এসব বিষয়ে আপাতত মাথা ঘামাচ্ছেন না বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের খবর চাউর হওয়ার পর তিনি বলেছেন, ‘দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই। অকারণে হৈচৈ করেও লাভ নেই। দেখা যাক কী হয়। কপালে যদি থাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলব, না থাকলে হবে না।’
মুখে না বললে কী হবে, মনে মনে হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অন্তত একটি ম্যাচ জিতে সব ‘ষড়যন্ত্রের’ বেড়াজাল ছিন্ন করার প্রত্যয়ই ব্যক্ত করছেন টাইগার দলনেতা।