এয়ার কানাডার কেবিন ক্রুদের ধর্মঘট উঠছে, ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে ফ্লাইট

SHARE

এয়ার কানাডা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ক্রুদের বেতন বাড়ানোর দাবি নিয়ে চলা বিরোধের অবসান ঘটেছে। চার দিনের টানা ধর্মঘট শেষে এই বিরোধের অবসান ঘটেছে। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে হাজার হাজার যাত্রী আটকে পড়েন এবং শত শত ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সকালে কানাডিয়ান ইউনিয়ন অব পাবলিক এমপ্লয়িজ (সিইউপিই) এই চুক্তির ঘোষণা দেয় এবং এয়ার কানাডাও সেটি নিশ্চিত করে।
সন্ধ্যার পর থেকে ধীরে ধীরে ফ্লাইট চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

এই ধর্মঘটে ১০ হাজারের বেশি ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট অংশ নেন। বেতন বৃদ্ধি ও কাজের সময়সূচিসংক্রান্ত দাবিতেই তারা কর্মবিরতিতে যান। সিইউপিই জানিয়েছে, এই সমঝোতা ‘শ্রমিক ও এভিয়েশন খাতে এক ঐতিহাসিক রূপান্তর’ নিয়ে আসবে।
তবে পূর্ণ চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। চুক্তি কার্যকর হতে হলে তা ইউনিয়নের সদস্যদের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

সিবিসি নিউজের তথ্য মতে, এয়ার কানাডা ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের জন্য তাৎক্ষণিক ৮ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক প্রস্তাবে থাকা বেতনের হার ইউনিয়নের মতে ‘মুদ্রাস্ফীতির নিচে, বাজারমূল্যের নিচে এবং এমনকি ন্যূনতম মজুরিরও নিচে’ ছিল।

চুক্তি অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি ফ্লাইট শুরুর আগে অন্তত এক ঘণ্টার জন্য ‘গ্রাউন্ড পে’ দেওয়া হবে, যা হবে কর্মীদের ঘণ্টা প্রতি বেতনের ৫০ শতাংশ এবং প্রতিবছর এই হার ৫ শতাংশ হারে বাড়বে।

সিইউপিই বলেছে, ‘অবৈতনিক কাজের যুগ শেষ।’ এই সমঝোতাকে তারা ‘শিল্পের জন্য একটি ঐতিহাসিক লড়াই’ বলেও উল্লেখ করেছে। ধর্মঘটকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে কানাডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস বোর্ড সোমবার কাজে ফেরার নির্দেশ দিলেও ইউনিয়ন তা মানেনি।

এমনকি সরকারের চাওয়া সাপ্তাহিক সালিশি প্রক্রিয়াও তারা প্রত্যাখ্যান করে, একে ‘করপোরেট চাপে নতি স্বীকার’ বলে সমালোচনা করে।
এর পরেই কানাডার শ্রমমন্ত্রী প্যাটি হাইডু উভয় পক্ষকে আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানান এবং এভিয়েশন সেক্টরে ‘অবৈতনিক শ্রম’ নিয়ে তদন্তের ঘোষণা দেন।

সরকার অনুমোদিত একজন মধ্যস্থতাকারীর সহায়তায় সোমবার রাতে টানা ৯ ঘণ্টা আলোচনার পর মঙ্গলবার সকালে সমঝোতা হয়। এয়ার কানাডা জানিয়েছে, এই ধর্মঘটে ৫ লাখেরও বেশি যাত্রী সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। বিমান ও ক্রু সদস্যরা সঠিক স্থানে না থাকায় পূর্ণ পরিষেবা ফিরতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক্স-এ লিখেছেন, ‘এই সমঝোতার খবর শুনে আমি স্বস্তি পেয়েছি। আশা করি এটি ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের জন্য ন্যায্য পারিশ্রমিক নিশ্চিত করবে এবং লাখো পরিবার, কর্মজীবী ও পর্যটকদের দুর্ভোগের অবসান ঘটাবে।’ এয়ার কানাডা প্রতিদিন গড়ে ৭০০টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় রুটে যাত্রী পরিবহন করে।

সূত্র : এএফপি