নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আইসিসির বিচারকসহ ৪ জনের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

SHARE

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার (২০ আগস্ট) মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল এই কর্মকর্তাদের নাম বিশেষভাবে চিহ্নিত নাগরিকদের তালিকায় যুক্ত করেছে।

নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্তদের মধ্যে রয়েছেন— বিচারপতি নিকোলাস ইয়ান গুইলু, উপ-প্রসিকিউটর নাজহাত শামীম খান, মামে মানদিয়ায় নিয়াং এবং কিম্বারলি প্রোস্ট।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, বিচারপতি গুইলুর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুমোদনের কারণে।
অন্যদিকে কিম্বারলি প্রোস্টকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে আফগানিস্তানে মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুমোদনের জন্য।

ফরাসি নাগরিক গুইলু আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার–১–এর সদস্য, যে চেম্বার ২০২৪ সালের নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

উপ-প্রসিকিউটর খান ও নিয়াংকে অভিযুক্ত করা হয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির কথিত ‘অবৈধ কার্যক্রম’ সমর্থন করার জন্য এবং ইসরায়েলি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে পরোয়ানা বহাল রাখার পক্ষে কাজ করার কারণে।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, এসব নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪২০৩’-এর আওতায়, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির ‘অপকারী পদক্ষেপ’ ঠেকাতে প্রণয়ণ করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও অভিযোগ করেছেন, এই কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের নাগরিকদের সম্মতি ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক বা বিচার কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করেছেন।

নিষেধাজ্ঞার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বা মার্কিন নিয়ন্ত্রণাধীন এসব কর্মকর্তার সম্পদ ও আর্থিক স্বার্থ এখনই অবরুদ্ধ হয়ে গেল। এছাড়া তাদের মালিকানাধীন যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার থাকলে সেটিও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে।

আইসিসির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই আদালতের সদস্য নয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনও যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপ’ নেওয়ার অভিযোগে আইসিসি ও প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছিল।

অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।