বিএনপি করবেন না- সরকারকে মুচলেকা সাবিহ উদ্দিনের!

SHARE

sabihবিএনপি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় থেকে বের হয়েছেন সাবিহ উদ্দিন আহমেদ! গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনা ঘটেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার ৩৯ দিন পর ১১ইফেব্রুয়ারি প্রথম কোন কূটনীতিক হিসেবে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। সেদিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গিবসনের বৈঠকে অংশ নিতে যান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ।

বৈঠক শেষে গিবসন চলে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে গ্রেফতার আতঙ্কে পড়েন তারা। এমন পরিস্থিতিতে কার্যালয়ে দুদিন অবস্থান করেন সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় তিনি তার ব্যবসায়ী ভাইকে ফোন করে জানান, গুলশান কার্যালয়ে থাকলে মরে যাবেন। তিনি আর কোনো দিন বিএনপি করবেন না। গুলশান কার্যালয় থেকে তাকে যেন বের করে নিয়ে যান।

সাবিহ উদ্দিন আহমেদের এ ফোন পেয়ে তার ব্যবসায়ী ভাই সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি তাকে গুলশান কার্যালয় থেকে নিয়ে যান।

এর আগে ৫ জানুয়ারি ২০ দলীয় জোটের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ের বাইরে ব্যারিকেড দিয়ে অবরুদ্ধ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৯ জানুয়ারি শেষরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যারিকেড তুলে নিলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় কার্যালয় ছাড়েননি খালেদা জিয়া। প্রথম থেকেই তার সঙ্গে কার্যালয়ে অবস্থান করছেন দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতাসহ কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রথম দিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে কার্যালয়ে আটকা পড়েছিলেন সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। পরদিন তিনি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। ৭ জানুয়ারি ফের খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যান সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। ওই দিন অবরুদ্ধ অবস্থায় খালেদা জিয়ার শারীরিক খোঁজখবর জানতে চেয়ে ফোন দেন ভারতের ক্ষমতাসীন পার্টি বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। পরে এ ফোনালাপের বিষয়টি তিনি দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও কূটনীতিক উইংয়ের প্রধান শমসের মবিন চৌধুরীকে তার বাসায় গিয়ে অবহিত করেন। ৮ জানুয়ারি মধ্যরাতেই বাসা থেকে গ্রেফতার হন শমসের মবিন চৌধুরী।

এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়াকড়ি আরোপের পর কার্যালয়মুখী হননি তিনি।

উল্লেখ্য, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৭ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বৃটেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন সাবেক এ আমলা। পরে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দিলে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলের পর ঠাঁই পান চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটিতে। এরপর তিনি দলের কূটনীতিক উইংয়ে কাজ করতেন। কূটনীতিক মহলে তার ভূমিকা নিয়ে একাধিকবার সমালোচনার মুখে পড়েন দলীয় মহলে। ২০১২ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভারত সফরকালে দিল্লিতে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রানজিট প্রসঙ্গে দলীয় নীতির বাইরে বক্তব্য দিয়েও তিনি সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।

সাবিহ উদ্দিনকে নিয়ে দলের মধ্যে সন্দেহ অনেকেরই ছিল। তিনি আসলে কার লোক- প্রায়ই প্রশ্ন উঠেছে। তিনি দলের বেতনভুক ছিলেন। তাকে মাসে দুই লাখ টাকা করে বেতন দেয়া হতো বলে দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়। আর এই টাকা দিতেন বিএনপি এক ব্যবসায়ী নেতা, যিনি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।