করোনায় বিশ্বজুড়ে ফিরে আসছে হিন্দুদের ‘নমস্তে’

SHARE

নমস্কার বা নমস্তুতে বা সংক্ষেপে নমস্তে হচ্ছে বৈদিকযুগ হতে প্রচলিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কর্তৃক ব্যবহৃত অভিবাদনরীতি। সাধারণত দুই হাত জোড় করে ‘নমস্কার’ শব্দটি উচ্চারণ করা হয়ে থাকে বলে একে অঞ্জলি মুদ্রা বা প্রণামও বলা হয়। ‘নমস্কার’ শব্দটি এসেছে মূল সংস্কৃত শব্দ ‘নমঃ’থেকে যার আভিধানিক অর্থ সম্মানজ্ঞাপনপূর্বক অবনত হওয়া। এটি একান্তই হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিবাদনরীতি। তবে করোনাভাইরাস হিন্দুদের এই অভিবাদনকে বিশ্বজুড়ে নতুন করে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় বিশ্বজুড়ে করমর্দন এবং আলিঙ্গন বর্জন করা শুরু হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সিহোফার এর সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকার করেছেন। করোনা আতঙ্কে মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী অভিবাদন রীতি করমর্দন করবেন না বলে জানিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এখন থেকে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে দেখা করার সময় আলিঙ্গন বন্ধ হবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি হিন্দু রীতি ‘নমস্তে’ দিয়েই এখন বিশ্ব নেতাদের অভিবাদন জানাবেন। এটি জীবাণু থেকে মুক্ত থাকার একটি নিখুঁত শুভেচ্ছা বিনিময় পদ্ধতি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে জর্জ ডব্লিউ বুশ পর্যন্ত নমস্তেকে আভিবাদনের সঠিক পদ্ধতি বলে মেনে নিয়েছেন। এমনকি ট্রাম্প করমর্দনকে একটি বর্বর অনুশীলন বলে অভিহিত করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের কলাম লেখক মাউরিন দউড স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি যখন ট্রাম্পের সাক্ষাত্কার নিতে গিয়েছিলেন তখন তিনি ট্রাম্পের টেবিলে বড় একটি জীবাণুনাশক বোতল দেখেছিলেন। করমর্দনের পর তিনি এটা দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিয়েছিলেন।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর) – এর কর্মীদের জন্য নমস্তেকে বিশ্বব্যাপী অভিবাদনের রীতি হিসেবে ছড়িয়ে দেওয়ার একটি দুর্দান্ত সুযোগ এনে দিয়েছে। নয়াদিল্লির সাংস্কৃতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে এটা নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করবে।

গান্ধী এবং যোগ ব্যায়ামের পরে নমস্তে অবশ্যই ভারতের পরবর্তী প্রধান সাংস্কৃতিক রফতানি হতে পারে। মহামারী এবং নভেল করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে নমস্তের চেয়ে ভাল আভিবাদন রীতি আর নেই।