উটের রাজ্যে মানুষের নৃশংসতা!

SHARE

অস্ট্রেলিয়ার ভয়াবহ দাবানলের মধ্যে প্রচণ্ড গরম ও খরার কারণে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ১০ হাজার উটকে গুলি করে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। আর সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত পাঁচ দিনে পাঁচ হাজারেরও বেশি উট মারা হয়েছে সেখানে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মারা হয়েছে এই উটদের।

দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবানলের মধ্যে পানির অভাব হওয়ায় মানুষের বাড়ি ঢুকে পড়ছিল উটের দল। শুধু পানি খাওয়া নয়, বাড়ি-ঘর ও মানুষেরও ক্ষতি করছিল তারা। খাবার ও পানির অভাব দেখা দিয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী অধ্যুষিত আনাঙ্গু পিটজানটজাটজারা ইয়ানখানজাটজারা (এপিওয়াই) অঞ্চলের স্থানীয় সরকারের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মারিতা বাকের জানান, এই উটের দৌরাত্ম্যে এলাকার অনেক সমস্যা হচ্ছে। মারিতা বলেন, আমরা গরমের মধ্যে আটকে রয়েছি। বাড়ির বাইরে থাকা যাচ্ছে না। ভিতরেও কোনোরকমে এসি চালিয়ে থাকতে হচ্ছে। তার মধ্যে প্রতিদিন উটেরা এসে বেড়া ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢুকে এসির মধ্যে থেকে পানি খাওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়াও যেখানে যেখানে খোলা পানি রয়েছে সব খেয়ে যাচ্ছে।

মারিতা বাকের আরো বলেন, এই এলাকায় প্রায় দুই হাজার তিনশ মানুষের বাস। আমরা বুঝতে পারছি এই সিদ্ধান্তের ফলে বন্যপ্রাণী সংগঠনগুলো আমাদের বিরোধিতা করবে। কিন্তু বর্তমানে মানুষদের প্রাণ বাঁচানো আমাদের কাছে বেশি গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এই এলাকার দায়িত্বে থাকার ফলে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল দাবানলের মধ্যে পানির জোগান যেন শেষ না হয়ে যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের তাতে সমস্যা হতো।

প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করেছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সংগঠনগুলো। তাদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতি অন্যভাবেও মোকাবিলা করা সম্ভব হতো। কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এই পাঁচ হাজারেরও বেশি উট মেরে ফেলার ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।