আওয়ামী লীগের কমিটিতে থাকবে ছাত্রলীগের প্রাধান্য

SHARE

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর। এই কাউন্সিলে একদিকে যেমন তরুণ ত্যাগি পরীক্ষিতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে অন্যদিকে এবার কাউন্সিলে প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতারা প্রাধান্য পাবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলাে নিশ্চিত করেছে। এবার কাউন্সিলে আগামীর তরুণ নেতৃত্ব গড়ে তােলা ও বিকশিত করার জন্যই নেতৃত্ব বিন্যাস করা হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময় শুদ্ধি অভিযান, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ এবং টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে শুন্য সহিষ্ণুতা নীতি নিয়ে এ হচ্ছে আওয়ামী লীগ। এই শুদ্ধি অভিযান করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা যে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন তা হলাে, দলের ভাবমূর্তি নষ্টের পেছনে এবং দলের ইমেজ নষ্টের পেছনে কাজ করছে অনুপ্রবেশকারীরা। বিশেষ করে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যারা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে তাদের একটি বড় অংশ বিএনপি জামাতদের অংশ।

এরা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করে টাকা দিয়ে বিভিন্ন পদ পদবী দখল করেছে। দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই বাস্তবতাতেই আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে হলে একেবারেই তৃণমূল থেকে আওয়ামী লীগ করা অথবা ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর এমন অবস্থানের কারণেই প্রান হন ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দর। জন্য সুবর্ণ সুযােগ তৈরী হয়েছে এবার কাউন্সিলে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র গুলাে বলছে, এবারের কাউন্সিলে একঝাঁক প্রবীণ নেতাকে উপদেষ্ঠা মণ্ডলীতে নিতে হবে। প্রেসিডিয়ামসহ কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরী করা হবে অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং কর্মক্ষমদের দিয়ে। সেই বিবেচনা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বের প্রাধান্য দেখা যাবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলাে বলছে, ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে যারা আওয়ামী লীগে এসেছে তাদের অধিকাংশই দলের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং দলের জন্য চিন্তাভাবনা করে কাজ করবে বলে মনে করে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। আর সেই বিবেচনা থেকেই এবারের কাউন্সিলে ছাত্রলীগ থেকে আসা নেতারা আলাদা পক্ষপাত পাবেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। ইতিমধ্যেই সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দায়িত্ব পালন করছেন।

এবারের কাউন্সিলে এদের পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি মাহবুবুর রহমান হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি প্রেসিডিয়ামে চলে যান সেক্ষেত্রে তারা যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাবেন। তবে আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করছেন যে, শেষ পর্যন্ত চমক হিসেবে কোন তরুণ প্রাক্তন ছাত্রলীগ ও দলের সাধারণ সম্পাদকের পদে দেখা দিতে পারে। তবে এরা ছাড়াও সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দর মধ্যে যারা এখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন তাদের মধ্যে বিপ্লব বড়ুয়া, আমিনুল ইসলাম আমিন, মারুফা আক্তার পপি এবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পদোন্নতি পেতে পারেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এছাড়াও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুভাষ সিংহ রায়, ইকবালুর রহিম, ইসহাক আলী খান পান্নাসহ বেশ কয়েকজন এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিষিক্ত হতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলাে বলছে, যারা ছাত্রলীগ করে এবং যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে কোন বদনাম নেই এবং যারা ২০০৯ থেকে দলের সংকট সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তাদেরকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুঁজে বের করছেন এবং তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে তিনি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আর এই বিবেচনা থেকেই নতুন কমিটিতে একটা তরুণ ক্লিন ইমেজ এবং ছাত্রলীগের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যাবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।