নুসরাতকে হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে

SHARE

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা সম্বলিত নিম্ন আদালতের রায়ের কপি (যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত) আজ মঙ্গলবার বিকেলে হাইকোর্টে পৌঁছেছে। এই ডেথ রেফারেন্স পাবার কথা নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

এদিকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এই মামলার সঙ্গে সারাদেশের মানুষের আবেগ জড়িত। সুতরাং এই মামলা সংক্রান্ত ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির জন্য যে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তার সবই নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, নথি পৌঁছার পর কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। এখন যাবতীয় নথি পরীক্ষা করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা তা যাচাই করা হবে। এটা আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারিরাই করবেন। এরপর পেপারবুক তৈরি করা হবে। পেপারবুক তৈরির পর শুনানি হবে। সুতরাং এইসব প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ গত ২৪ অক্টোবর এক রায়ে নুশরাত হত্যা মামলায় ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আইন অনুযায়ী ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য ফেনীর আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে রায়টি লাল কাপড়ে মুড়িয়ে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। আজ বিকেল ৫টার দিকে নথি হাইকোর্টে পৌছে। প্রথমে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে নেওয়া হয়। এরপর তা সংশ্লিষ্ট আদান-প্রদান শাখায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদান-প্রদান শাখার কর্মকর্তা এই নথি (ডেথ রেফারেন্স) পাবার পর তা রেজিস্ট্রার বুকে এন্ট্রি করাসহ যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদন করেন।

ফেনীর আদালতের স্টেনোগ্রাফার শামসুদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের আদালতের নিজস্ব গাড়িতে করে দুপুর সাড়ে বারোটায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। বিকেল ৫টায় সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছি।

হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (আদান-প্রদান শাখা) কে এম ফারুক হোসেন জানান, বিকেল ৫টার পর নথি পেয়েছি।

যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত ২৭ মার্চ একই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় মুখোশধারী ও বোরকা পরা দুর্বৃত্তরা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে নুসরাতকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থা মারাত্মক হওয়ায় তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত গত ১০ এপ্রিল বুধবার রাতে মারা যায়।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৯ মে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ২০ জুন ফেনীর বিচার শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২৭ জুন থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বিচার শেষে ফেনীর আদালত ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন।