রাবির ফোকলোর বিভাগের সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

SHARE

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফোকলোর বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোবাররা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা, বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠেছে।image_111454_0

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষক এসব অভিযোগ করলেও প্রশাসন তা আমলে নিচ্ছে না।

এ নিয়ে বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিভাগীয় সভাপতির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা গত সোমবার ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের কমিটি অব কোর্সেস এবং মঙ্গলবার সকালে পূর্ব নির্ধারিত বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির সভাও বর্জন করেছেন।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. মোবাররা সিদ্দিকা ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে আসছেন। অধিকাংশ দিনই বিভাগে অনুপস্থিত থাকায় বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ডিনস কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে ফোকলোর বিভাগের সাবেক সভাপতি প্রফেসর সাইফুদ্দীন চৌধুরী, প্রফেসর মো. কহীদুর রহমান, ড. আবুল হাসান চৌধুরীসহ অধিকাংশ শিক্ষক সাংবাদিকদের জানান, সভাপতি বিভাগের প্রতি দায়িত্বে অবহেলা এবং প্রায়ই বিভাগে অনুপস্থিত থাকায় বিভাগের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিভাগের কয়েকটি বর্ষের ক্লাশ-পরীক্ষারও সভাপতির দায়িত্বে অবহেলার কারণে সময়মতো সম্পন্ন হচ্ছে না।

এছাড়াও বিভাগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন তিনি। তার মনগড়া চিন্তা ভাবনাও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদরে উপর চাপিয়ে দেন। তিনি এর আগে বিভাগের ফান্ড থেকে কাউকে না জানিয়ে অর্থ উঠিয়ে নেন। যদিও তিনি পরে তা ফেরত দেন।

তাকে বিষয়টির ব্যাপারে মৌখিকভাবে অবহিত করেন কয়েকজন শিক্ষক। কিন্তু শিক্ষকদের কথায় কোনো কর্নপাত করেননি তিনি। এসব ব্যাপারে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতরে গিয়ে মৌখিকভাবে অবহিত করেন।

বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ আরো বলেন, “গত সোমবার সকাল ১০টায় সভাপতির কক্ষে বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের কমিটি অব কোর্সেস-এর সভা আহ্বান করা হয়। এর পরদিন মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সভাপতির কক্ষে বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা আহ্বান করা হয়। বিভাগের সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভাগের ১৪ জন শিক্ষক এই দুইটি সভা বর্জন করেন।

বিভাগের মোট ১৭ জন শিক্ষকের মধ্যে একজন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে থাকায় বর্তমানে সভাপতিসহ ১৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৩ জন শিক্ষক সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থাজ্ঞাপন করেছেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোবাররা সিদ্দিকা গাড়িতে আছেন বলে জানান। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করার জন্য আমার বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক অপপ্রচার চালাচ্ছে।

শিক্ষকরা সভা বর্জন করেননি, বরং আমিই মঙ্গলবারের সভাটি স্থগিত করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর সভার আহ্বান করেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক বলেন, “ফোকলোর বিভাগের সভাপতি ড. মোবাররা সিদ্দিকা এর আগে যতগুলো ছুটি নিয়েছেন সেগুলো বিধি মোতাবেকই হয়েছে। তবে বিভাগে বেশিরভাগ সময়ে অনুপস্থিতি থাকার ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে এর আগেও মৌখিক অভিযোগ এসেছে। কিন্তু কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিভাগ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ আসলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে সভাপতির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে।”