মমতাকে মোদি, বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে তৃণমূলের ৪০ বিধায়ক

SHARE

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর লোকসভার চণ্ডীতলায় জনসভা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তার সরকারের আর বেশি দিন নেই।

মোদি বলেন, দিদি, ২৩ তারিখে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর আপনার অনেক বিধায়কই আপনার সঙ্গে আর থাকবেন না। ছেড়ে চলে আসবেন। অন্তত ৪০ জন বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন!

তৃণমূলের কে কে বিজেপির সঙ্গে তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন, তা নিয়ে মমতার দলে দীর্ঘ দিন ধরেই সন্দেহ রয়েছে। এমনকি মমতা সম্প্রতি দলের এক বৈঠকে একাধিক নেতার নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, কী, আপনাদের কাছে ফোন আসছে তো?

ভোটের মধ্যেই সেই সন্দেহ উসকে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। শুধু এখানেই থামেননি তিনি। সুর চড়িয়ে বলেন, দিদি, তুমহারা বাঁচনা মুশকিল হ্যায়!

এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রচারণা চালানোর শুরু থেকেই নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহরা বলছেন, এই নির্বাচনের পরেই পশ্চিমবঙ্গের সরকার পতন ঘটবে। তৃণমূল আবার তার পাল্টা হিসাবে বলছে, তাদের (বিজেপি) মাথা খারাপ হয়েছে, লোকসভার ভোটে পশ্চিমবঙ্গের সরকার পড়বে কেন!

দেখতে গেলে তার জবাব রয়েছে মোদির কথায়। প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন, লোকসভা ভোটের ফলাফল দেখে তৃণমূল থেকে এত বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেবেন যে, মমতার সরকারই ভঙ্গুর হয়ে পড়বে।

মোদির ওই মন্তব্যের জবাব তৃণমূল সরকারিভাবে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে আজ। তৃণমূলের নেতাদের মতে মোদির ওই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বোঝা যায় যে, তিনি তাদের দল ভাঙার চেষ্টা করছেন। ভারতে দলত্যাগ বিরোধী আইন রয়েছে এবং তৃণমূল মোদির বিরুদ্ধে মামলাও করতে পারে।

তবে সেসবের আগে দলের এক নেতা বলেন, চ্যালেঞ্জ করছি ৪০ জনের নাম জানান মোদি। আরেকজন বলেন, বিধায়ক তো দূরের কথা, একজন পৌর প্রতিনিধিও পাবেন না মোদি।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুধু তৃণমূলের মধ্যে নয়, পুরো পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের মধ্যে মোদি এই বার্তা কৌশলে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন যে, দলকে শায়েস্তা করতে এখন তৃণমূলের অনেকেই তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সুতরাং নেতারা যদি যোগাযোগ রাখতে পারেন, তাহলে কর্মী-সমর্থকরা ইতস্তত করছেন কেন!

অনেকের মতে, এ কারণেই মমতা ব্যানার্জির ভাতিজার প্রসঙ্গও বক্তৃতায় এনেছেন মোদি। কারণ, রাজনৈতিক মহলে ধারণা হলো, মমতার ভাতিজার আচরণ ও ব্যবহারের কারণেই তৃণমূলের অনেক নেতা, মন্ত্রী অসন্তুষ্ট। তার সম্পর্কে মোদি সমালোচনা করলে বা আক্রমণাত্নক হলে তৃণমূলের অনেকেই খুশি হচ্ছেন।