লাল কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় তিন ম্যাচ মাঠের বাইরে ছিলেন মোসাম্মৎ সাগরিকা। এতে নিশ্চিতভাবেই মাঠটাকে মিস করছিলেন তিনি। বিশেষ করে নিজের করা গোলগুলোকে। কতটা মিস করছিলেন তা যেন ফেরার ম্যাচে বুঝিয়ে দিলেন টুর্নামেন্টের প্রথম হ্যাটট্রিককারী।
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের আজকের ম্যাচটি ‘অঘোষিত’ ফাইনাল। নেপালের সঙ্গে ড্র করলেই শিরোপা নিশ্চিত। আর জিতলে তো অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। এমন সমীকরণের ম্যাচে নামার আগে গতকালই কোচ পিটার বাটলার জানিয়েছেন, জিতেই শিরোপা উদযাপন করতে চায় বাংলাদেশ।
কোচের চাওয়া পূরণে শুরুতেই দায়িত্বটা নিজের কাঁধে নিলেন সাগরিকা। গোল করে দলকে আনন্দ উদযাপনের সুযোগ এনে দিলেন তিনি। তার গোলেই বাংলাদেশ প্রথমার্ধ শেষ করেছে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচ শুরু হয় উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা দিয়ে।
এরপর ম্যাচ শুরু হতেই দ্বিতীয় মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নেপালের বিপক্ষে ফেরা মোসাম্মৎ সাগরিকা নিয়েছিলেন শটটি। তবে ডান প্রান্ত থেকে তার নেওয়া শটটি কর্নারের বিনিময়ে নেপালকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক সুজাতা তামাং।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল বাংলাদেশ। সতীর্থর নেওয়া কর্নার কিকে দারুণ এক হেড করেছিলেন সাগরিকা।
তবে গোললাইন থেকে নেপালের এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করলে হতাশ হতে হয় সাগরিকাকে। ৩ মিনিট পরে অবশ্য ঠিকই জাল খুঁজে নিয়েছেন বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড। সতীর্থর দারুণ এক পাসে গোলবার ছেড়ে বেরিয়ে আসা নেপালের গোলরক্ষককে কাটিয়ে ফাঁকাবারে বল জড়িয়ে দেন তিনি। তাতে টুর্নামেন্টের পঞ্চম গোলে ফেরাটা রাঙালেন এই ফরোয়ার্ড।
১৯ মিনিটে মিলি আক্তারের ভুলে প্রায় সমতায় ফিরেছিল নেপাল। তবে ভাগ্যেকে পাশে পায়নি তারা। সঙ্গে শেষ মুহূর্তে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দলকে রক্ষা করেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক। বাতাসে থাকা বল ধরতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন তিনি। সুযোগ পেয়ে নেপালের এক খেলোয়াড় শট নিলেন তা বাঁ প্রান্তের পোস্টে লেগে বাধা হয়। ফিরতি সুযোগে আরেকজন শট নিলেন গোললাইন অতিক্রম করার আগেই শূন্যে লাফিয়ে তালুবন্দি করেন মিলি।
অন্যদিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নেপালের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি মুনকি আক্তার। শটটা অবশ্য গোলবারেই নিয়েছিলেন তিনি। তবে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের হাতে বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় বলের গতি যায় কমে। তবুও জালে জড়াতে পারত বলটা। কিন্তু একদম শেষ মুহুর্তে কোনো মতে কর্নারের বিনিময়ে নেপালকে দ্বিতীয় গোল হজম করা থেকে বাঁচান রক্ষণভাগের এক খেলোয়াড়। পরে ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়ে আরো বেশ কিছু আক্রমণ করলেও দ্বিতীয় গোলের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।