নির্বাচনের টানেলে ঢুকে গেছি, জনগণের দুয়ারে যান : আমীর খসরু

SHARE

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা কিন্তু নির্বাচনের টানেলে ঢুকে গেছি।
সবাই নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। জনগণের দুয়ারে যান।’

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে কাজির দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর আহমদ সড়কে সরকারের নির্লিপ্ততায় সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের উদ্যোগে কেন্দ্রঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যারা নির্বাচন চায় না, তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, কিন্তু আপনি নির্বাচন চান না।
তাহলে রাজনৈতিক দল গঠন করার তো কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি রাজনীতি করবেন, নির্বাচনে যাবেন না, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবেন, তাহলে আপনার তো রাজনৈতিক দল গঠন করার প্রয়োজন নেই। আপনি আজই রাজনীতি ছেড়ে দেন। আরেকটা কাজ করতে পারেন, সেটা প্রেসার গ্রুপের কাজ করতে পারেন।
কারণ প্রেসার গ্রুপ দরকার। রাজনীতিবিদদের সিদ্ধান্ত যদি খারাপ হয়, সিদ্ধান্তে যদি ভুল হয়, প্রেসার গ্রুপের একটা কাজ আছে। আপনি সেই দায়িত্বটা নিয়ে নেন। শুধু রাজনৈতিক দলের চেহারা দেখাবেন, কিন্তু ভোট করতে দেবেন না, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেবেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সহনশীলতা, পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ, রাজনীতিতে ইতিবাচক একটা পরিবর্তন আসবে।
দেশের মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, জীবন দিয়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য। গণতান্ত্রিক পরিবেশ তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে, যখন একটা রাজনৈতিক দল অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতি ভিন্নমত পোষণ করেও সম্মান জানাবে, সহনশীলতা দেখাবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটা হচ্ছে, কিছু রাজনৈতিক দল তারা শিক্ষা নেয়নি। তারা শেখ হাসিনার কাছ থেকে ওই বদ-অভ্যাসগুলো এখনো বাংলাদেশে চালু রাখতে চায়। শেখ হাসিনাকে এ ধরনের চরিত্রের জন্য বাংলাদেশের মানুষ বিতাড়িত করেছে। সেই রাজনৈতিক সংস্কৃতি বাংলাদেশের মানুষ আর গ্রহণ করবে না। সুতরাং আগামী দিনের রাজনীতি পরিষ্কারভাবে পরস্পরের সম্মানবোধের রাজনীতি হতে হবে, সহনশীলতার রাজনীতি হবে, একে অপরের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেও সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা ব্যক্তিগত চরিত্র হননে নেমেছেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্য রাখছেন, উসকানিমূলক বক্তব্য রাখছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। বাংলাদেশের মানুষ আজকে ভিন্ন রাজনীতি দেখতে চায়, সুষ্ঠু, সম্মানজনক রাজনীতি দেখতে চায়। সুতরাং বিএনপি সেটাকে ধারণ করে, আমরা সেই পথে চলছি। সুষ্ঠু রাজনীতির পথে চলছি, সহনশীল রাজনীতির পথে চলছি, পরস্পর সম্মানবোধের রাজনীতির পথে আমরা চলছি।’

দলের কর্মীদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে উঠান বৈঠক আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘প্রত্যেকের এলাকায় মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যান এবং উঠান বৈঠক করেন। মানুষ আপনার কাছে আসবে না, আপনাদের যেতে হবে। ওই আগের মতো বক্তব্য দিয়ে হবে না, জনগণের দুয়ারে দুয়ারে যেতে হবে।’

সবাইকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। সবাই মিলে কাজ করতে হবে। যার যার এলাকায় সবাই নির্বাচনী কার্যক্রমে নেমে যান।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।