সদ্য বহিষ্কৃত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি কারাফটকের পকেট গেট দিয়ে মাথা নিচু করে ঢুকতে আপত্তি করেন। এ সময় কারাগারের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। পরে জেলসুপার ফরমান আলী বিষয়টি সমাধান করেছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের সামনে এসব ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সাড়ে ৩টার দিকে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারা ফটকে এসে পৌঁছায়। এসময় তিনি নেমে কারাফটকে দাঁড়িয়ে যান। কারারক্ষীরা তাকে কারাগারের পকেট গেট দিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাঁধ সাধেন। লতিফ সিদ্দিকী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আমি এখনো একজন সংসদ সদস্য, মাথা নত করে পকেট গেট ঢুকবো না, পুরো গেইট খুলতে হবে। এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাকে পকেট গেট দিয়ে প্রবেশের অনুরোধ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। এসময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে লতিফ সিদ্দিকীর কথাকাটাকাটি হয়। পরে সিনিয়র জেলসুপার ফরমান আলী মূল ফটকে এসে পুরো গেইট খুলে থাকে কারাগারের ভিতরে নেন।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন। লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে জামিনের জন্য কোনো আইনজীবী না থাকায় জামিন শুনানি হয়নি। এ সময় মামলার বাদীসহ শত শত আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দুপুর ১টা ২২ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় হাজির হয়ে তিনি আত্মমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের পর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে নেয়া হয়।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়ের করা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে।
রবিবার রাতে ভারত থেকে দেশে ফেরার পর তাকে গ্রেফতার করা নিয়ে নানা নাটকীয়তা তৈরি হয়। তাকে গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার হরতালের ডাক দেয় ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। এ ছাড়া তাকে গ্রেফতার না করা হলে বুধবার ইসলামী ঐক্যজোট ও বৃহস্পতিবার হেফাজতে ইসলাম হরতালের ঘোষণা দেয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতারের আইনি কোনো জটিলতা নেই এবং যেকোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা যাবে।
এদিকে এর আগে সোমবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ বহাল এবং একই সঙ্গে সংসদ অধিবেশন চলমান থাকায় তাকে গ্রেফতারে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, তাকে গ্রেফতারের জন্য স্পিকারের অনুমতি নিতে হবে।
অপরদিকে সোমবার সংসদ অধিবেশন শুরুর আগ মুহূর্তে নিজ কার্যালয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেফতারে তার অনুমতি লাগবে না।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাতে বহিষ্কৃত মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ঢাকায় ফেরেন।