‘শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে দুই দিনের সার্ক শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হয় ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের মূল পর্ব। কাঠমান্ডুর ভ্রীকুটি মণ্ডপে রাষ্ট্রীয় সভাগৃহে শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ও সার্কের বিদায়ী চেয়ারপারসন আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম। তার সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা প্রদীপ প্রজ্বলন করেন।
সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসে, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানসহ ৯টি পর্যবেক দেশও সম্মেলনে তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।
এদিকে সার্কের নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা। শীর্ষ সম্মেলন শুরুর কিছুক্ষণ পরই কোনো অনাপত্তি ছাড়াই সুশীল কৈরালা সার্কের নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নতুন চেয়ারম্যান সুশীলকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান সার্কের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং অন্যান্যরা।
শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে কাঠমান্ডুতে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি যান চলাচলের ওপরও আরোপ করা হয়েছে কড়াকড়ি। নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা নিজে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন।
সম্মেলনের দুই দিন বুধ ও বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে নেপালে। সম্মেলনস্থল কাঠমান্ডুর রাষ্ট্রীয় সভাগৃহে (সিটি হল) সাংবাদিকদের প্রবেশেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের মাত্র দুইজন সাংবাদিক সেখানে ঢুকতে পারবেন।
সম্মেলনের অবকাশে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের কথা রয়েছে। এ বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নেপাল। নেপালি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাক-ভারত অচলাবস্থা দূর করার চেষ্টা করছেন কাঠমান্ডুর কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে হোটেল ক্রাউন প্লাজা সোয়েলটি-কাঠমান্ডুতে নিয়ে যাওয়া হয়। নেপাল সফরকালে তিনি এ হোটেলে অবস্থান করবেন।
সম্মেলনের অবকাশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রথম দিন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট ড. আশরাফ গনি এবং মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
একই দিন তিনি অন্যান্য দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের সঙ্গে হোটেল ক্রাউন প্লাজা সোয়েলটিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। পরদিন ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও সার্কের অন্যান্য নেতা রিট্রিট সেশনে যোগ দিতে নেপালের শীর্ষ পর্যটন কেন্দ্র ধুপিখেল যাবেন। একই দিন ধুপিখেল থেকে ফিরে তারা শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও সার্কের অন্যান্য নেতা কাঠমান্ডুর রাষ্ট্রপতি ভবনে নেপালের প্রেসিডেন্ট ড. রামবরণ যাদবের সাথে সাক্সাৎ করবেন। তারা নেপালের রাষ্ট্রপতির দেয়া ভোজসভায়ও যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৮ নভেম্বর দুপুরে দেশে ফেরার কথা রয়েছে।