গাজা দখল নিয়ে নেতানিয়াহু ও আইডিএফ প্রধানের মধ্যে তীব্র বিরোধ

SHARE

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)-এর চিফ অব স্টাফ আইয়াল জামিরের মধ্যে গাজা পুরোপুরি দখলের প্রস্তাব নিয়ে তীব্র মতবিরোধ হয়েছে। হিব্রু গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, জামির এই সিদ্ধান্তকে সেনাবাহিনীর জন্য একটি ‘ফাঁদ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিতর্ক আরো জোরালো হয় যখন নেতানিয়াহুর ছেলে ইয়াইর নেতানিয়াহু (যিনি কোনো সরকারিভাবে দায়িত্বে নেই) এক্স-এ একটি পোস্টে জামিরকে আক্রমণ করে বলেন, ‘তিনি যেন মধ্য আমেরিকার কোনো কলার প্রজাতন্ত্রে ৭০-এর দশকে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’ জবাবে জেনারেল জামির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ‘এটা কেমন দেখায়? আপনি কেন আমাকে আক্রমণ করছেন? যুদ্ধ চলাকালে কেন আমার বিরুদ্ধে কথা বলছেন?’ কান পাবলিক ব্রডকাস্টার এর সূত্র দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে।

 

নেতানিয়াহু জবাবে বলেন, ‘প্রতিবার যখন আপনার পরিকল্পনা মেনে নেওয়া না হয়, মিডিয়ায় পদত্যাগের হুমকি দেন— এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমার ছেলে ৩৩ বছর বয়সী, সে প্রাপ্তবয়স্ক।’ জেনারেল জামির বৈঠকে বলেন, গাজা পুরোপুরি দখল করলে অন্তত ২০ জন জীবিত জিম্মি আরো বিপদের মুখে পড়বেন এবং সেনাবাহিনীর সক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হবে।

 

তিনি বলেন, ‘আপনি গাজায় একটি ফাঁদ তৈরি করছেন।

’ চ্যানেল ১২–এর বরাত দিয়ে জানানো হয়, জামির আরো বলেন, ‘পুরো দখল জিম্মিদের জীবন হুমকিতে ফেলবে এবং বাহিনীর স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ণ করবে।’

জামিরের প্রস্তাব ছিল, গাজা শহর ও অন্যান্য জনবহুল এলাকাকে ঘিরে রেখে সেখান থেকে সামরিক অভিযান চালানো হোক— একটি ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়ার কৌশল।

নেতানিয়াহু জামিরকে বলেন, পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করতে। জামির জানান, তিনি তা ইতিমধ্যেই করেছেন।

তখন নেতানিয়াহু বলেন, ‘সংশোধন করুন এবং আবার উপস্থাপন করুন।’ বৈঠক শেষে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘আইডিএফ নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার যেকোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে প্রস্তুত।’ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই পরিকল্পনা অনুমোদনের কথা রয়েছে।

বর্তমানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নতুন পরিকল্পনায় পুরো গাজা দখলের কথা বলা হচ্ছে।

ফলে পুরোপুরি ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে গাজা। এতে গাজার মিলিয়ন মানুষের জন্য কী পরিণতি হবে এবং মানবিক সংস্থাগুলোর কাজ কতটা ব্যাহত হবে— তা এখনো অনিশ্চিত।

সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল।