সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান হামলায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রধান নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।শুক্রবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাগদাদি নিহত হওয়া সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে দেখছে তারা। খবর রাশিয়া টুডের।
মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৮ মে উত্তর সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি রাকায় জঙ্গি সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকে হামলা চালায় রাশিয়ার এসইউ-৩৪ বিমান এবং এসইউ-৩৫ মাল্টিরোল বিমান। ওই সময় সেখানে বাগদাদিও উপস্থিত ছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
রুশ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাকায় অবস্থানরত জঙ্গিদের কথিত ‘উত্তর করিডোর’ দিয়ে পালানোর পথ তৈরি করার পরিকল্পনা করতে উচ্চ পর্যায়ের ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিভিন্ন চ্যানেলে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ওই বৈঠকে আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদি উপস্থিত ছিলেন এবং বিমান হামলার ফলে তিনি নিহত হয়েছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ওই বিমান হামলায় নিহত আইএস নেতাদের মধ্যে রাকার আমির আবু আল হাজি আল মাসরি, রাকা থেকে এস সোহনে পর্যন্ত এলাকার আমির ইবরাহিম আল নায়েফ আলহাজ এবং আইএসের নিরাপত্তা প্রধান সুলাইমান আল সাওয়াহ রয়েছেন।
ইতোমধ্যে মস্কো ওই বিমান হামলার স্থান এবং সময় সম্পর্কিত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানায় রুশ মন্ত্রণালয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ইসলামিক স্টেট বিরোধী জোট জানিয়েছে, রুশ বিমান হামলায় বাগদাদি নিহত হওয়ার তথ্য তারা নিশ্চিত করতে পারছে না।
বার্তা সংস্থা এপিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অপারেশন ইনহ্যারেন্ট রিজলভের সমন্বিত যৌথ টাস্কফোর্সের মুখপাত্র কর্নেল রায়ান ডিলন বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত খবর নিশ্চিত করতে পারছি না।
যদিও এর আগে বেশ কিছু সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে আল বাগদাদির মৃত্যু নিয়ে জল্পনার কথা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন, ইরাক বা সিরীয় সেনাবাহিনীর কেউই এসব খবর নিশ্চিত করেনি।
সর্বশেষ গত ১২ জুন সিরিয়ার সরকারি টেলিভিশনের বরাতে একটি সিরীয় অনলাইন পত্রিকায় বাগদাদির নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। তবে এ খবরও দাফতরিকভাবে কেউ নিশ্চিত করেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের গ্রীষ্মে যখন জঙ্গি সংগঠন আইএস ইরাক এবং সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল দখলে নিতে শুরু করলে ওই বছরের ২৯ জুন সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে আসেন বাগদাদি।
ওই সময় সিরিয়ার আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চল এবং ইরাকের মধ্যাঞ্চলের দখল করা জায়গায় তথাকথিত খেলাফতের প্রতিষ্ঠা দিয়ে নিজেকে খলিফা ঘোষণা করেন বাগদাদি।
এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাগদাদিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী বা স্পেশালি ডেজিগনেটেড গ্লোবাল টেরোরিস্ট-এসডিজিটি ঘোষণা করে।