রোহিঙ্গা মানবাধিকার: মিয়ানমার থেকে রেনেটাকে সরিয়ে দিচ্ছে জাতিসংঘ

SHARE

মিয়ানমারে নিযুক্ত ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি রেনেটা লক ডেসিলিয়ানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছে জাতিসংঘ।

রেনেটার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন সত্ত্বেও মানবাধিকার ইস্যুতে নীরবতা পালনের অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষ করে গত বছর হাজার হাজার রোহিঙ্গা ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার এবং ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পরেও মিয়ানমারে রেনেটার নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘ টিম আশ্চর্যজনকভাবে চুপ ছিল।

এছাড়া রেনেটার দায়িত্বকালে মিয়ানমারে জাতিসংঘ ‘স্পষ্টত অকার্যকর’ এবং আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জর্জরিত হয়ে পড়েছে বলে সংস্থাটির নথিপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

রেনেটা লক ডেসিলিয়ানকে নিশ্চিতভাবে সরানো হচ্ছে বলে জাতিসংঘের একজন নারী মুখপাত্রের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।

রেনেটাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার সঙ্গে তার প্রশংসিত কর্মদক্ষতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।

তবে ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন কূটনৈতিক ও দাতব্য সংস্থার সূত্রগুলো বিবিসিকে বলেছেন, মিয়ানমারে মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে ব্যর্থতাই রেনেটা লক ডেসিলিয়ানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ।

বিশেষ করে নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে এটি সম্পর্কিত।

বিবিসি জানিয়েছে, রেনেটা এবং তার মুখপাত্র কোনো তথ্যের জন্য সাধারণ অনুরোধেও সাড়া দিতেন না। সংঘাতপূর্ণ রোহিঙ্গা অধ্যূষিত রাখাইন প্রদেশে সফরকালেও একই কাজ করেন।  সেখান থেকে ফেরার পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার দেয়া বক্তব্য ধারণের অনুমতি দিতেও অস্বীকার করেন।

এছাড়া অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সভায় দাতব্য সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠককালে মানবাধিকার বিষয়কে হরদম বাদ দেয়া হয়েছে বলে বিবিসিকে জানান।

এসব কারণে লক ডেসেলিয়ান এবং তার টিমের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে যে, রোহিঙ্গাদের মতো সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার পরিবর্তে তারা উন্নয়ন কর্মসূচি এবং মিয়ানমার সরকারের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেসের জন্য প্রস্তুতকৃত এক নথিতে মিয়ানমারে জাতিসংঘ টিমকে ‘স্পষ্টত অকার্যকর’ এবং সেখানে সংস্থাটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রেনেটা লক ডেসিলিয়ান বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। তাকে পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হলেও সাড়ে তিন বছরের মাথায় মিয়ানমার থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রেনেটা লক ডেসিলিয়ান বাংলাদেশেও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি ছিলেন। তার দায়িত্বকালে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা জারিসহ পট পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে। ওই সময়ে রেনেটার ভূমিকা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।