জুনেই ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি, খাতা মূল্যায়ন করবেন দুজন পরীক্ষক

SHARE

এখন থেকে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি খাতা দুজন পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের মেধা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে বলে মনে করছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। জুন মাসেই ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতে পারে।

৩৮তম বিসিএস থেকেই নতুন এ নিয়ম চালু হবে। তা ছাড়া এই বিসিএস থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলির ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় আলাদা করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ৫০ নম্বরের প্রশ্ন রাখা হবে। কেউ চাইলে লিখিত পরীক্ষা ইংরেজিতেও দিতে পারবেন।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগেই ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। বরাবরের মতো এবারও অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তবে এবার অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচিতি নম্বরও (এনআইডি) দিতে হবে আবেদনে। এর ফলে নন ক্যাডার বা অন্য কোনো পরীক্ষায় একজনের ছবি বদলে আরেকজনের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছে পিএসসি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘স্নাতক শেষ করে একজন পরীক্ষার্থী বিসিএস দেয়। সবার বয়স ১৮ বছরের ওপরে। কাজেই প্রত্যেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার কথা। তবে অনলাইনে আবেদনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে হবে না। শুধু এনআইডি নম্বর দিলেই হবে।’

এত দিন পর্যন্ত বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা একজন পরীক্ষক দেখতেন। ফলে মাঝেমধ্যেই পরীক্ষার্থীরা বঞ্চনার শিকার হতেন বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন। ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর অন্তত ২০০ প্রার্থী প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন। অতীতেও অনেকে ভালো পরীক্ষা দিয়ে কাঙ্ক্ষিত নম্বর পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

পরীক্ষার্থীদের দাবি, বিসিএসের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যেখানে এক-দুই নম্বরেই ভাগ্য বদলে যায়, সেখানে অনেক সময়েই পরীক্ষকের অবহেলায় অনেকেই কাঙ্ক্ষিত নম্বর পান না। ২০১৬ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে গেলে রাষ্ট্রপতিও দুজনকে দিয়ে খাতার যথাযথ মূল্যায়নের কথা বলেন। এমন পরিপ্রেক্ষিতেই পিএসসি এ সিদ্ধান্ত নিল।

বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘আমরা চাই একজন পরীক্ষার্থীর মেধার সর্বোচ্চ যাচাই। এ কারণে আমরা দুজন পরীক্ষককে দিয়ে খাতা মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর দুজনের নম্বর গড় করা হবে।’

তবে যে ৩৮তম বিসিএস নিয়ে এত আয়োজন, সে বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি কবে? শিক্ষিত লাখো তরুণের প্রধান জিজ্ঞাসা এখন এটাই। তাঁদের অভিযোগ, ৩৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল। অথচ এখনো ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। অথচ পিএসসি প্রতিবছরের শুরুতেই বিসিএসের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু জুন চলে এলেও ২০১৭ সালে কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি।

দেরির কারণ পিএসসি সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আরও আগেই ৩৮তম বিসিএসের শূন্য পদের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। সে অনুযায়ী এ বছরের শুরুতে ৩৮তম বিজ্ঞাপন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে ৩৬তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে ৩৮-এর বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পিএসসি। ৭ জুন এই মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন দ্রুতই বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে।

৩৮তম বিসিএসে ২১০০ পদ থাকছে
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসন ক্যাডারের ৩০০ এবং পুলিশ ক্যাডারের ১০০টি পদসহ ৩৮তম বিসিএসে ২ হাজার ১০০-এর বেশি পদ থাকছে। পরে এই পদ আরও বাড়তে পারে। কবে নাগাদ ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে, জানতে চাইলে মোহাম্মদ সাদিক আজ বৃহস্পতিবার রাতে  বলেন, ‘ঈদের ছুটির আগেই আমরা বিজ্ঞাপন দিয়ে দেব। আমরা চাইছি, ৩৫তম বিসিএসের নন-ক্যাডারের ফলাফল যত দ্রুত সম্ভব শেষ করব। ৩৬ বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ। আমরা এখন এটার ফলাফলের কাজ করব। ৩৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেছে। এখন ৩৮-এর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’