ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সরকারের সঠিক পদক্ষেপের কারণে চলতি বছর হজ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দেশের বিমানবন্দরে কোনো হাজি যেমন হয়রানির সম্মুখীন হননি তেমনি সৌদি আরবে গিয়েও কেউ বিড়ম্বনার শিকার হননি। এবার স্বল্পমূল্যে কাবার কাছাকাছি স্থানে হাজিদের জন্য ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ফলে আমাদের খরচ কিছুটা কম হয়েছে এবং কিছু টাকা জমা রয়েছে।
সব হাজি দেশে আসা শেষ হলে জমাকৃত টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তিনি বলেন, টাকা মেরে খাওয়ার জন্য আমরা ক্ষমতায় বসিনি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ১টি মডেল মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ২টি মসজিদ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ তিনটি মসজিদ নির্মাণে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে সারা দেশে ৫৬৪টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে। এ মসজিদগুলো সে প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা রাউজানের মডেল মসজিদ উদ্বোধন ও মসজিদে জুমার বয়ান করেন। উদ্বোধনী বয়ানে উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার ১৩ কোটি টাকা ব্যয় করে এ মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছে।
এখন মসজিদকে আবাদ রাখার দায়িত্ব এলাকাবাসীর। মসজিদভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে সমাজের সবাইকে নিয়মিত মসজিদমুখী হতে হবে। মসজিদকে সচল রাখতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করতে হবে। কেননা নামাজ সবাইকে সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে মুক্ত রেখে মানুষের মধ্যে নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করে, মূল্যবোধ সমুন্নত রাখে।
পরে উপদেষ্টা এখানে জুমার নামাজ আদায় করেন। আজ প্রথম দিনে মসজিদে খুতবা দেন ও জুমার নামাজে ইমামতি করেন হাটহাজারী বড় মাদরাসার প্রধান মুফতি মো. জসীম উদ্দিন। নামাজ শেষে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতিতে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদ নির্মাণ করে দেওয়ায় বর্তমান সরকারের জন্য দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান ও প্রকল্প পরিচালক মো. শহীদুল আলম বক্তৃতা করেন। তিনতলা বিশিষ্ট এ মসজিদ কমপ্লেক্সে একসঙ্গে ১ হাজার ২০০ মানুষের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া মুর্দা গোসল দেওয়ার জায়গা, কার পার্কিং, ইমাম মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, এতিমখানা, ইসলামিক বই প্রদর্শন ও বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অফিস, কিচেন ও ডাইনিং সুবিধা, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, গণশিক্ষা ব্যবস্থা, হজ্জ বুকিং এর ব্যবস্থা, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম শিক্ষক ও মুয়াজ্জিন এর থাকার কক্ষ, গেস্ট রুম ও কনফারেন্স রুম, অটিজম কর্ণার প্রভৃতি সুবিধা রয়েছে। এছাড়া এখানে মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজের সুবিধাও রাখা হয়েছে।
এর আগে সকালে উপদেষ্টা হাটহাজারী পৌরসভা এলাকার ফটিকা কডিয়ার দীঘির পাড় এলাকায় হাটহাজারী উপজেলার মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ অনুষ্ঠানে মুনাজাত পরিচালনা করেন হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা শেখ আহমদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান পরিচালক মাওলানা খলিল আহমদ কাসেমী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী প্রমুখ।