গাজার হাসপাতালে জোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইসরায়েল

SHARE

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার অন্যতম প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র আল-আহলি আরব ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতাল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) ভোরে চালানো এ হামলায় হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, আইসিইউ এবং অস্ত্রোপচার বিভাগসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।

চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বিমান থেকে পরপর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। হামলার আগে হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসককে ফোন করে সতর্ক করেন এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে হামলা চালানো হবে, দ্রুত রোগীদের সরিয়ে ফেলুন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত রোগী ও আশ্রয়প্রার্থীদের সরিয়ে নিতে শুরু করে।

স্থানীয় সাংবাদিকদের সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের হুমকি দিয়ে বলেন, সব রোগী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষকে অবশ্যই নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে। আপনাদের হাতে আছে মাত্র ২০ মিনিট।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, মিসাইল ছোড়ার পর হাসপাতালের ভবন থেকে আগুন ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে। রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে বিছানা থেকে উঠে দ্রুত বাইরে সরে যেতে শুরু করেন। হাসপাতালের সামনে আশ্রয় নেওয়া নারী ও শিশুরাও এলাকা ত্যাগ করেন। তবে রয়টার্স এই ছবি ও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

গাজার বেসামরিক জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।

হামাস এই হামলাকে ‘ভয়াবহ ও জঘন্য অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে। গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ইসরায়েল পদ্ধতিগতভাবে গাজার স্বাস্থ্য খাত ধ্বংসের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ৩৪টি হাসপাতাল ধ্বংস করেছে।

প্রসংগত, এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে একই আল-আহলি হাসপাতালে এক বিস্ফোরণের ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল।
তখন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছিল, এটি ছিল ইসরায়েলি বিমান হামলা। যদিও ইসরায়েল সে সময় দায় অস্বীকার করে বলেছিল, এটি ছিল প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদের একটি রকেট ব্যর্থ হওয়া বিস্ফোরণ।

সম্প্রতি গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর ছোট আকারের আল-আহলি হাসপাতালটিই স্থানীয়দের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।