শেরপুরে কামারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন

SHARE

kamruzzzএকাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ রোববার ভোর পাঁচটা ২০ মিনিটে শেরপুর সদর উপজেলার কুমরি বাজিতখিলা এতিমখানার পাশে কামারুজ্জামানের মরদেহ দাফন করা হয়।

ভোর সাড়ে ৪ টায় কামারুজ্জামানের লাশ শেরপুরের বাজিতখিলায় পৌঁছায়। এ সময় আইনশৃংখলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং কামারুজ্জামানের আত্মীয়স্বজনসহ মোট ১৪টি গাড়ি  ঢাকা থেকে শেরপুর জেলা শহর হয়ে বাজিতখিলা বাজারে পৌঁছে।

পরে সেখানে মিডিয়াকর্মীদের থামিয়ে দিয়ে লাশের গাড়ি চলে যায় এক কিলোমিটার দূরে মুদিপাড়া বাজিতখিলা এতিমখানার সামনে। কোনো মিডিয়াকর্মীদের ওই গ্রামে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
কামারুজ্জামানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কামারুজ্জামানের ভাই কফিলউদ্দিন প্রশাসনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহ গ্রহণ করেন।
ভোর  ৪ টা ৫০ মিনিটে মাদরাসা প্রাঙ্গনে ফজরের আযানের আগেই কেবলমাত্র কামারুজ্জামানের আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতেই নামাজে জানাজা পড়ানো হয়। জানাজার নামাজ পড়ান কামারুজ্জামানের ভাগ্নি  জামাই এবং ওই মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ। জানাজায় তিন কাতারে প্রায় ৫০ জন আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

এরপর  ভোর ৫ টায় ওই এতিমখানার সামনে পূর্ব নির্ধারিত স্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।জামায়াত নেতার নসিয়ত অনুযায়ীই কুমরিবাজিতখিলা গ্রামে তাকে দাফন করা হয়। সেখানে কামারুজ্জামান একটি এতিমখানা, মাদ্রাসা ও মসজিদ করেছেন। পাশেই রয়েছে ঈদগাহ।

এলাকায় নজিরবিহীন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়।মূল সড়ক থেকে কুমরিবাজিতখিলা গ্রামের দিকে যাওয়া যায় এমন প্রতিটি প্রবেশ পথে তল্লাশি চালানো। এলাকার বাইরের কোনো লোককে ঢুকতে দেয়া হয়নি। গাড়ি বা মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মিডিয়াকর্মীরা ছিলেন নিষিদ্ধ।

শনিবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মিত স্থায়ী ফাঁসির মঞ্চে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর রাতেই তার লাশ র‍্যাব-পুলিশের পাহারায় অ্যাম্বুলেন্সে করে শেরপুরে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
একাত্তরে শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে ১২০ জনকে হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে ২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে আসামিপক্ষ। সোহাগপুর হত্যাকাণ্ডের দায়ে গত বছরের ৩ নভেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হলে ৫ মার্চ তা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন কামারুজ্জামান। এরপর ৬ এপ্রিল পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ। ৮ এপ্রিল পুনর্বিবেচনার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ওই দিনই রায়ের অনুলিপি কারাগারে পাঠানো হয়। ওই দিনই কারা কর্তৃপক্ষ তাকে রায় পড়ে শোনায়। এরপর তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কি না। কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষার আবেদন জানাননি।