গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গজারিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে পৌঁছান হেলাল। এর আগে বিকেল পাঁচটার দিকে লিবিয়া থেকে একটি বিমানে হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে আসেন হেলালসহ আইএসের হাতে আটক আরেক বাংলাদেশি।
হেলালের ফেরার খবর পেয়ে তাকে এক নজর দেখতে মঙ্গলবার ভোর থেকেই ভিড় করেন আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশিরা। হেলাল বাড়িতে ফেরায় স্বস্তি ফিরেছে তার পরিবার-পরিজন ও গ্রামবাসীর মধ্যে।
হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আল্লাহর রহমত আর দেশের মানুষের দোয়ায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছি। মুসলমান পরিচয় পেয়ে ওরা (আইএস) আমাকে কষ্ট দিয়ে হলেও বাঁচিয়ে রাখে এবং শেষ পর্যন্ত মুক্তি দেয়।’
হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, ‘মৃত্যুকুপ থেকে স্বামীকে ফিরে পেয়েছি; এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কি থাকতে পারে?’ তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা তাদের বাবাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেছে। স্বস্তি ফিরে এসেছে গ্রামবাসীর মধ্যেও।’
২০০৯ সালে জীবিকার তাগিদে লিবিয়ায় পাড়ি জমান নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হেলাল উদ্দিন। লিবিয়ার সিরতে শহরের আল গনি এলাকায় বাউজ নামের একটি তেল কোম্পানিতে চাকরি করতেন হেলাল। গত ৬ মার্চ আল গনি তেলক্ষেত্রে হামলা চালিয়ে দুই বাংলাদেশিসহ ১১ জনকে অপহরণ করে আইএস জঙ্গিরা। ১৭ দিন পর গত ২৪ মার্চ সকাল ১০টার দিকে হেলাল উদ্দিন স্ত্রী আলেয়া বেগমের কাছে ফোন করে বলেন, ‘তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি খুবই কষ্টে আছেন।’
২৪ মার্চ রাতের কোনো এক সময় আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ফেলে রাখে আইএস জঙ্গিরা। অসুস্থ অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে হেলাল উদ্দিনের কোম্পানির পক্ষ থেকে তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।